নওগাঁর মহাদেবপুরে ১৭ বছর আগে আলোচিত ফজলুর রহমান হত্যাকান্ডে জড়িত ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং দন্ডবিদির ১৪৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে অতিরিক্ত আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। আজ (০৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক ফেরদৌস ওয়াহিদ এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মহাদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের আতুরা গ্রামের মৃত সুবিত আলীর ছেলে ইব্রাহিম (৬০), রাইগাঁ গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে আশরাফ (৪৫) এবং একই গ্রামের তছির উদ্দীনের ছেলে শহীদুল ইসলাম (৫০), আব্দুস ছালাম (৬০) ও আবুল কালাম আজাদ (৫০)। রাষ ঘোষণার সময় তারা প্রত্যেকেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৪ এপ্রিল জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রাইগাঁ গ্রামে ফজলুর রহমান (৫৫) নামে এক পশু চিকিৎসককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শাহানাজ বেগম বাদী হয়ে ওইদিনই স্থানীয় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশের পর দ্বিতীয় দফায় তদন্ত শেষে আদালতে ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি।
দীর্ঘ সময় ধরে মামলা চলাকালীন ৩ জন আসামীর মৃত্যুও হয়। পরবর্তীতে ১৬ জনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মামলা চলার পর ২২ জনের স্বাক্ষগ্রহন শেষে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামীপক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রায় ঘোষণা করে আদালত। রায়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং বাকীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি শুনানী করেন অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলী অ্যাডভোকেট সওকত ইলিয়াস কবির। আসামী পক্ষে শুনানী করেন অ্যাডভোকেট অমরিন্দ্রনাথ ঘোষ ও অ্যাডভোকেট মোকছেদ আলী মন্ডল।
এদিকে, এ রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে মামলার বাদী নিহত ফজলুর রহমানের স্ত্রী শাহানাজ বেগম বলেন, এ রায়ে আমরা পুরোপুরি ন্যায় বিচার পাইনি। আরেক মূল আসামীকে খালাস দিয়েছেন বিচারক। তাই উচ্চ আদালতে আপিলের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।