ছবিঃ সংবাদ সারাবেলা।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব যেন থামছে না। মানুষ কর্তৃক হাতির আবাসস্থল ধ্বংস করায় মাঝে মাঝে তাদের আবাসস্থল ফিরে পেতে হানা দেয় বনবিভাগে নির্মিত বসতবাড়িতে। এতে করে হাতির প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মানুষ। ফলে, বনকে হাতি শূন্য করতে মানবসৃষ্ট নানান ফাঁদ পাতেন মানুষ। তারই ধারাবাহিকতায় গত এক মাসে মানবসৃষ্ট বৈদ্যতিক ফাঁদে পড়ে ২টি হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রথম হাতিটি আজ থেকে বিগত ১মাসে আগে চকরিয়া সীমান্ত এলাকা লামায় হলেও এক মাসের ব্যবধানে সর্বশেষ আজ চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘূণিয়া আবুইল্লা ঘোনায় এলাকায় বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে আরো একটি হাতি প্রাণ হারায়।
সরেজমিন দেখা যায়, আবুইল্লাঘোনা আবুল হোসেনের বাড়ি লাগোয়া পাহাড়ের পাশের তামাকখেত থেকে একটি মৃত হাতি উদ্ধার করেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ। এসময় স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা হলে তারা জানিয়েছেন, তামাকখেত রক্ষা করতে দেওয়া বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। যা প্রতিনিয়ত তাদের ফসল রক্ষায় তারা করে থাকে। এদিকে সরেজমিনে আরো দেখা যায়, ফাঁসিয়াখালীর ঘুনিয়া পাহাড়ের পাদদেশের একটি তামাকখেতে পড়ে রয়েছে মৃত হাতিটি। সেটি ঘিরে উৎসুক জনতা ভিড় করেছেন। তবে তাঁদের মৃত হাতিটির পাশে যেতে নিষেধ করছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, চকরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তামাকখেত রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণ থেকে তামাকখেত রক্ষা করতে বৈদ্যুতিক ফাঁদ ব্যবহার করছেন কৃষকেরা। এ ধরনের ফাঁদে পড়ে সুস্থ-সবল হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহেরাজ উদ্দিন জানান, গত জানুয়ারিতে ফাঁসিয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুর রহমান ও বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতি হত্যার বিরুদ্ধে কয়েকটি সচেতনতামূলক সভাও করেন। মেহরাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে ঘুনিয়া এলাকার কয়েকটি তামাকখেত থেকে বৈদ্যুতিক ফাঁদ অপসারণ করা হয়েছিল। তবে, সচেতনতামূলক সভা করেও কোন ধরনের ফলাফল পাওয়া যায়নি। বরং, উল্টো একই এলাকায় হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। হাতিটির মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করেন চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের কর্মকর্তা মেহরাজ উদ্দিন বলেন, বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে বলা সম্ভব নয়। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ বলা যাবে। তিনি আরও বলেন, মৃত পুরুষ হাতিটির বয়স ৪০ থেকে ৪২ বছর। তার শরীরে বাহ্যিকভাবে কোনো অসুস্থতা চোখে পড়েনি। তবে, বনবিভাগে বৈদ্যুতিক মিটার না দিতে চিঠিও দেয়া হয়েছে। পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ তা না মেনে বনবিভাগের জায়গা মিটার বসিয়ে দিচ্ছে।
এবিষয়ে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মারুফ হোসেন বলেন, হাতি ও মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে বনবিভাগ বিভিন্ন সভা করলেও তা মানছেনা মানুষ। হাতির মৃত্যুর মূল কারণ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে জানা যাবে।
এদিকে, বনবিভাগের জায়গায় নির্মাণকৃত স্থাপনায় বৈদ্যুতিক মিটার দেওয়ার বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চকরিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh