ছবিঃ সংবাদ সারাবেলা।
বিনামুল্যে ল্যাট্রিন বিতরণে অর্থ আদায় ও সমবায় সমিতি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা নিয়ে শহরের ২নং ওয়ার্ড শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক শিমুল মোল্লার দায়ের করা মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলায় ডেকে নিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে ৪ নং বালিজুড়ী ইউনিয়ন শ্রমিক দলের আহবায়ক শরীফ উদ্দিন। এদিকে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবীতে আজ (১২ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে কলেজের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছে মাদারগঞ্জ খাজা শাহ সূফী ইউনুস আলী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীরা। হৃদয়কে মুক্তি না দিলে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
জানা যায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারী মাদারগঞ্জে সমবায় সমিতির গ্রাহকদের আমানতকৃত অর্থ ফেরতের দাবীতে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এক পুলিশ কর্মকর্তার অপসারণ চেয়ে লিফলেট তৈরি করে বিক্ষোভকারীরা । তাদের দাবীকৃত ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট দেন সংবাদ সারাবেলা মাদারগঞ্জ প্রতিনিধি হৃদয় হাসান। পরদিন ৫ ফেব্রুয়ারী থেকে মাদারগঞ্জ খাজা শাহ সূফী ইউনুস আলী ডিগ্রী কলেজের নির্বাচনী (টেষ্ট) পরীক্ষা শুরু হয়। হৃদয় এই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী হিসেবে সকল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে আসছে। অন্যদিকে ২০২২ - ২০২৩ অর্থ বছরের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মানব সম্পদ বিভাগের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের ৬৫ টি পরিবারের জন্য বিনামুল্যে ল্যাট্রিন বরাদ্ধ করে তালিকা করা হয় । সেই ৬৫টি পরিবারের ল্যাট্রিনের কাজ তারা ঠিকাদারের কাছ থেকে কিনে নিয়ে ল্যাট্রিনের সরঞ্জাম আটকিয়ে বালিজুড়ী ইউনিয়নের তারতাপাড়া গ্রামের মরহুম রহিম উদ্দিনের ছেলে ইউনিয়নের শ্রমিকদলের আহবায়ক শরিফ উদ্দিন ও একই গ্রামের মরহুম লোকমান বগ এর ছেলে খাজা বগ তার সহযোগী হিসেবে প্রতিজনের থেকে ১০০০ আবার কারো কাছ ৩০০০ টাকা করে অর্থ আদায় করে প্রায় দের লক্ষ লক্ষাধিক টাকা তারা নিয়েছেন সুবিধাভোগোদের থেকে আদায় করে। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে শরীফ ও খাজা বগ সহ স্থানীয় আংশিক বিএনপির নেতাকর্মীরা হৃদয়ের ওপর ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে এবং হৃদয়ের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে।
এদিকে সমবায় সমিতির কর্মকর্তা ও বালিজুড়ী ইউনিয়ন শ্রমিক দলের আহবায়ক শরীফ উদ্দিন দৈনিক সংবাদ সারাবেলা পত্রিকার মাদারগঞ্জ প্রতিনিধি হৃদয়ের বিরুদ্ধে চাঁদপুর এলাকার সমবারুর ছেলে শিমুল মোল্লাকে দিয়ে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) মাদারগঞ্জ থানায় ১৮৬০ পেনাল কোডের ৩৮৫/৫০৬/৩৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের করান। রহস্যজনক কারনে অভিযোগ এর কোন তদন্ত না করেই অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা নেন মাদারগঞ্জ থানা পুলিশ । ১০ ফেব্রুয়ারী রাত থেকেই ইউনিয়ন শ্রমিক দলের আহবায়ক শরীফ উদ্দিন হৃদয়কে বার বার ফোন দিয়ে দেখা করতে বলে। ১১ ফেব্রুয়ারী হৃদয় পরীক্ষা দিয়ে বাড়ী ফেরার পথে শরীফ উদ্দিনের ফোন পেয়ে ১:৩০ মিনিটে তারতা পাড়া সকাল বাজার এলাকা থেকে হৃদয়কে পুলিশে ধরিয়ে দেয় শরীফ উদ্দিন। এর পর পরই হৃদয়কে দ্রুত আদালতে প্রেরণ করেন পুলিশ। এরপর থেকেই জামালপুর জেলা ও মাদারগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সাংবাদিকরাও প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে।
এদিকে খাজা শাহ সূফী ইউনুস আলী ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ সালেহ শাহ শফির প্রত্যয়ন পত্র থেকে জানা যায়, ৫ ফেব্রুয়ারী থেকে কলেজে নির্বাচনী (টেষ্ট) পরীক্ষা শুরু হয়। সেই কলেজের প্রতিটি অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতেছে হৃদয় হাসান। প্রতিদিনের ন্যায় ৯ ফেব্রুয়ারীর অনুষ্ঠিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষায়ও হৃদয় অংশ গ্রহণ করে। তিনি আরো উল্লেখ্য করেন, হৃদয়ের স্বভাব ও নৈতিক চরিত্র প্রশংসনীয়। হৃদয় কখনো রাষ্ট্র বা সমাজ বিরোধী কোন কাজ করে নাই।
কথা হলে দৈনিক সংবাদ সারাবেলা পত্রিকার মাদারগঞ্জ প্রতিনিধি হৃদয় হাসানের বাবা আজাদ মিয়া জানান, আমার ছেলে নির্দোশ। আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাসানো হয়েছে। মামলায় যে তারিখ ও ঘটনা দেখানো হয়েছে সেদিন আমার ছেলে কলেজেই ছিল। পরীক্ষায়ও অংশ গ্রহণ করেছে। কলেজে গিয়ে খোজ খবর নিলে আপনারা সত্যতা পাবেন।
গ্রেফতারের পর হৃদয় হাসান সাংবাদিকদের জানান, বালিজুড়ী ইউনিয়ন শ্রমিক দলের আহবায়ক শরীফ উদ্দিন আমাকে গতকাল রাত থেকে ফোন দিয়ে ডাকতেছে দেখা করার জন্য। আমি সকালে কলেজে গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে শেষ করে বাড়ীর উদ্দ্যেশ্যে রওনা হলে আমাকে আবারো কল দেয় শরীফ উদ্দিন। পরে আমি তারতাপাড়া সকাল বাজারে যাওয়া মাত্রই আমাকে পুলিশ গ্রেফতার করে ও আমার শরীরে হাত দেয় এবং অশ্লীল ভাষায় গালি গালাজ পারে। মামলাতে যে তারিখ ও ঘটনার সময় দেখানো হয়েছে সে সময় আমার কলেজে পরীক্ষার হলে ছিলাম আমি । সমবায় সমিতির আলোচনা গুলো নিয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে একটি চক্র রহস্যজনক কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানী করল । আমি দেশবাসীর কাছে বিচার চাই। আমি আল্লাহর কাছে এর বিচার দিলাম।
এ বিষয়ে সংবাদ সারাবেলা পত্রিকার জামালপুর প্রতিনিধি মাসুদুর রহমান জানান, মাদারগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধির বিরুদ্ধে মিথ্যা চাদাবাজির মামলা দেওয়া হয়েছেন। তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে এই মামলাটির রহস্য উদঘাটনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তবে হৃদয় যে নির্দোশ তার অসংখ্য প্রমাণাদি পাওয়া গিয়েছে। মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহারের দাবী জানাই।
এদিকে মামলার বাদী শিমুল মোল্লার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি জানান, এটা বিশাল কাহিনী। বলতে সময় লাগবে। সময় লাগবে কেন মামলা মিথ্যা নাকি প্রশ্ন করা হল, তিনি এড়িয়ে গিয়ে কলটি কেটে দেন।
অন্যদিকে মাদারগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হাসান আল মামুন জানান, তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh