একজন সংবাদকর্মীকে মারধোর করার এক সপ্তাহের ব্যবধানে রেলকর্মীরা এবার পিটিয়ে আহত করেছন এক সেনা সদস্যকে। গতকাল (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে ঘটে এই ঘটনা।
ট্রেনে ও প্ল্যাটফর্মে এক সেনাসদস্যকে মারপিটের অভিযোগে রেলওয়ের গার্ডসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাদের আটক করে সেনাবাহিনীর একটি দল। পরে তাদের রাজশাহী রেলওয়ে থানায় রাখা হয়।
আটক তিনজন হলেন- ঢাকা-রাজশাহী রুটের সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের গার্ড আতিকুর রহমান, অ্যাটেনডেন্ট মনছেহার আলী ও মো. মনির। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তাদের রেলওয়ে থানায় রাখা হয়েছিল। তাদের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছ, ঢাকা থেকে রাজশাহী গামী সিল্কসিটি ট্রেনে পাওয়ার কার ড্রাইভার ও টিটিই এর সাথে ট্রেনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয় এবং সেটি ট্রেনের মধ্যেই সমাধান হয়। এর পরও বিষয়টি স্টেশনে জানালে সেনা সদস্যকে মারার জন্য ট্রেন লাইটিং অফিসের ১৫/২০ জন কর্মচারি দেশীয় অস্ত্র বাঁশ, সেলাইরেঞ্জ, পাইপ নিয়ে স্টেশনে অপেক্ষা করতে থাকে।
ট্রেনটি রাজশাহী স্টেশনে থামার সাথে সাথে তারা ঐ সেনা সদস্যকে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। এতে সে অজ্ঞান হয়ে প্লাটফর্মে পড়ে যায়। যাত্রীদের সেবায় সুস্থ হয়ে তিনি সেনা ক্যাম্পে বিষয়টি জানালে রাতেই সেনাবাহিনী স্টেশন ঘিরে অপরাধীদের ধরতে অভিযানে নামে।
রাজশাহী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, আটক তিনজনকে থানায় রাখা হয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হয়তো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।
উল্লেখ্য, ট্রেনের বগি ও পাওয়ার কারে টিকিটবিহীন যাত্রী উঠিয়ে বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন রেলওয়ের এক শ্রেণির কর্মচারীরা। রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া সকল আন্তঃনগর ট্রেনের পাওয়ার কারেই বিনা টিকিটের যাত্রীদের বসানোর ব্যবস্থা করা হয় বলে অভিযোগ আছে। সম্প্রতি বিনা টিকিটের ট্রেনের যাত্রীর কাছ থেকে এক পাওয়ার কার চালকের টাকা নেওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে। এর জের ধরে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে একজন সাংবাদিককে মারধর করা হয়। এবার বিনা টিকিটের যাত্রীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার হলেন সেনাসদস্য।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য পশ্চিম রেলের মহব্যবস্থাপক মামুনুল হকের সরকারি মুঠোফোনে ও পশ্চিম রেলের প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলীর সরকারি মুঠোফোন কল করলে তারা না ধরায় তাদের কোন বক্তব্য নেয়া যায়নি।