বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের বড় বাঁশবাড়িয়া এলাকার বিএনপি নেতা হান্নান হাওলাদারের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) বড় বাশবাড়ীয়া গ্রামে এলাকাবাসী ও নির্যাতিতদের অংশগ্রহণে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। সন্ত্রাসী হামলায় আহত হান্নান হাওলাদার বড় বাশবাড়িয়া গ্রামের মৃত কালাই হাওলাদের ছেলে।
এ সময় বড় বাশবাড়িয়া গ্রামের আক্কাস হাওলাদার, আল আমিন হাওলাদার, আহত হান্নান হাওলাদারের স্ত্রী কোহিনুর বেগম, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহত আকুব্বর হাওলাদারের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার, হামলায় আহত ইজিবাইক চালক সোহাগ হাওলাদার, মিরাজ হাওলাদার, হারুন হাওলাদারসহ শতাধিক এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে বিএনপি নেতা হান্নান হাওলাদারকে একাধিকবার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। গত বছরেও হান্নান হাওলাদারেরর উপর আবারো সন্ত্রাসী হামলা করে তার হাত পা ভেঙ্গে পঙ্গু করে দিয়েছে। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকার বিদায় নিলেও আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো তাদের হামলা অব্যাহত রেখেছে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল নয়টার দিকে বিএনপি নেতা হান্নান হাওলাদার ইজি বাইকে করে বাগেরহাট কোর্টে মামলার হাজিরা দিতে যাচ্ছিল। ডেমা ইউনিয়নের পঞ্চমালা খাসির বাড়ির সামনে পৌঁছালে স্থানীয় সন্ত্রাসী এলাকার রুহুল আমিন হাওলাদার, আফজাল হাওলাদার, আলামিন হাওলাদার, রুবেল হাওলাদার, মানিক হাওলাদার, হোসাইন তরফদার ও রাব্বি ইজি বাইকের পথ রোধ করে।
এ সময় সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা রামদা ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে হান্নান হাওলাদার, আবু বক্কর ও ইজিবাইক চালক সোহাগ হাওলাদারকে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আহত তিনজনকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যায়। আহত হান্নান হাওলাদার ও আকুব্বর হাওলাদারের অবস্থা অসংকাজনক হওয়ায় তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সন্ত্রাসীদের হামলায় ইজিবাইক চালক সোহাগ হাওলাদারের হাত ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান অংশগ্রহণকারী বিক্ষোভকারীরা।
হামলায় আহত হান্নান হালদারের স্ত্রী কোহিনুর বেগম বলেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা ২০১০ সালে আমার স্বামীর উপর হামলা করেছে । ২০২৪ সালে হামলা করে তাকে পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছে। ৫ আগস্টের পরে পঙ্গু অবস্থায় তার উপর আবারো অমানবিক হামলা করা হয়েছে। সন্তান নিয়ে অত্যন্ত মানবতার জীবনযাপন করছে বলে জানান এই অসহায় গৃহবধূ। তার স্বামীর উপর হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।
এ বিষয়ে গ্রামের আলামিন হাওলাদার বলেন, আমরা বিএনপি করবার কারণে বিগত ফেসিস্ট সরকারের আমলে অনেক নির্যাতন, হামলা, মামলার শিকার হয়েছি। এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে। এখনো সেই স্বৈরাচারের দোসররা আমাদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উল হাসান জানান, ডেমা ইউনিয়নের বড় বাঁশবাড়িয়া গ্রামে দুটি পক্ষের মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হামলার ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।