নাটোরের সিংড়া উপজেলায় মসজিদে সিঁড়িতে ওসমান গনি নামের এক ব্যবসায়ীকে গুলি করার ঘটনায় তার একমাত্র ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সিংড়া আমলি আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন সিংড়া থানার ওসি আসমাউল হক। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার হোসেনের কাছে আসাদুজ্জামান ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ওই ব্যবসায়ীর ছেলে অভিযুক্ত মো. আসাদুজ্জামান ওরেফে বল্টু।
মো. ওসমান গনি ওরফে বাবু নামের ওই ব্যবসায়ীকে গুলি করার ঘটনায় তার ছেলে মো. আসাদুজ্জামান ওরফে বল্টু ১৯ দিন পর আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
এর আগে (১ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের পারুহারপাড়া মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে যান ওসমান গনি বাবু। মসজিদের সিঁড়িতে উঠতেই কে বা কারা তার পেছন থেকে গুলি করে। গুলিটি তার কোমরের পেছনে বাম পাশে লাগে। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে স্বজনরা সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
পুলিশ দীর্ঘ তদন্তের পর মঙ্গলবার তার একমাত্র ছেলে আসাদুজ্জামান বল্টুকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠালে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।
পুলিশ জানায়, আটকের পর বল্টু পুলিশকে জানিয়েছে তার ব্যক্তিগত ৭০ লাখ টাকা দেনা ছিল। বাবাকে হত্যার পর সেই সম্পত্তি বিক্রি করে সেই দেনা শোধের পরিকল্পনা করে বল্টু। পাশাপাশি সব সম্পদ একা ভোগ করবে এমনটা পরিকল্পা ছিল তার। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঢাকা থেকে পিস্তল কিনে ফজরের নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় ওসমান গনিকে গুলি করেন বল্টু। ওসমান গনি স্থানীয় বাজারে ধান-চালের ব্যবসা করেন। ঘটনার দিন ব্যবসায়ীর মেয়ে বেবি খাতুন সিংড়া থানায় একজনকে অজ্ঞাত করে মামলা দায়ের করেন। পরে দীর্ঘ তদন্তে ওসমানকে হত্যা চেষ্টায় তার একমাত্র ছেলে নাম উঠে আসে।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক বলেন, ব্যবসায়ী ওসমান গনিকে গুলির ঘটনায় তদন্ত শেষে তার একমাত্র ছেলেকে আটক করে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। সে পিস্তল দিয়ে তার বাবাকে গুলির কথা স্বীকার করেছে। পরে আদালতে আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবাবনবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ওসমান গনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি এখন আশঙ্কামুক্ত। তবে তার শরীর থেকে এখনো গুলিটি বের করা হয়নি বলে স্বজনেরা জানিয়েছেন। শিগগিরই তার অস্ত্রোপচার করা হবে।