চট্টগ্রামের চন্দনাইশে বিভিন্ন এলাকায় পুদিনা চাষ করে লাভবান হওয়ায় পুদিনা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। বিশেষ করে রমজান মাস জুড়ে চাহিদা বাড়ে পুদিনার। ফলে কৃষকেরা লাভের আশায় পুদিনা চাষে ঝুঁকছেন।
গত ২ মার্চ (রবিবার) সকালে চন্দনাইশ পৌরসভার গাছবাড়িয়া বুলার তালুক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা দলবেঁধে ক্ষেত থেকে পুদিনা তুলছেন। বেশ কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে নিজের ক্ষেত থেকে পুদিনা পাতা সংগ্রহের সময় কথা হয় কৃষক মো. ইদ্রিচ ও মো. আরিফুল ইসলামের সাথে। তারা বলেন, রমজান মাসে অন্যান্য সবজি চাষাবাদের পাশাপাশি পুদিনা পাতার চাষাবাদ করেন তারা। চলতি বছর আরিফুল ইসলাম ৫ গন্ডা ও ইদ্রিস ২ কানি পরিমাণ জমিতে পুদিনা পাতা'র চাষ করেছেন।
প্রতি গন্ডা জমিতে চাষ করতে খরচ পড়ে ৬ হাজার টাকা। প্রতি গন্ডায় ১০০ কেজিরও বেশি পুদিনা পাতা বিক্রি করা যায়। সে হিসেবে প্রতি গন্ডায় ৬ হাজার টাকার উপরে লাভবান হন তারা। রমজান মাস জুড়ে বিভিন্ন প্রকারের ভাজা ইফতারিতে যেমন বড়া, চাটনি, সালাদ, বোরহানি বানানোর কাজে পুদিনা পাতা ব্যবহার হয়। এছাড়া চা এবং শরবতেও পুদিনা পাতার ব্যবহার হয়। কৃষকরাও এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পুদিনা পাতা গাছের পরিচর্যা ও উত্তোলন করে বাজারে বিক্রির করার কাজে।
রমজান মাস জুড়ে প্রতিদিন দুপুর থেকে এলাকার শিশু-কিশোরদেরও দেখা যায় পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে পুদিনা পাতা বিক্রি করতে। বুলার তালুক এলাকার অপর এক কৃষক আবদুল খালেক জানান, তিনিও চলতি বছর ২ কানি জমিতে পুদিনা পাতার চাষাবাদ করেছেন। রমজানের শুরু থেকেই পুদিনা পাতার ব্যাপক চাহিদা থাকে। মাঝখানে কিছুটা চাহিদা কমলেও রমজানের শেষ দিকে এসে আবারো চাহিদা বাড়ে পুদিনার। চন্দনাইশের কৃষকরা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করেই পুদিনা পাতার চাষাবাদ করে আসছেন এবং সফলতা পাচ্ছেন বলে জানান।
কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, সকালে দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশনের পাইকারি সবজি বাজারে পুদিনা নিয়ে আসেন। দূর-দূরান্তের পাইকারি ব্যবসায়ীরা পুদিনা কিনে চট্টগ্রাম নগরীসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান। এছাড়াও স্থানীয় বাজারে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করেন তারা। চন্দনাইশ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আজাদ হোসেন বলেন, এখানকার ভূমিতে ঔষধি উদ্ভিদ পুদিনা পাতা চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন।
এবারও অধিক লাভের আশায় চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকায় ২০ হেক্টর জমিতে পুদিনা পাতার চাষাবাদ হয়েছে। ঔষধি উদ্ভিদ পুদিনা পাতার চাষাবাদে হেক্টরপ্রতি ফলন হয়েছে প্রায় ১০-১২ টন। এ জন্য তারা কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানান।