বরিশালে পাইকারি বাজারের চেয়ে দ্বিগুণ মূল্যে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। পাইকারি বাজার থেকে মাত্র ১০০ শ’ ফুটের ব্যবধানেই এই দাম দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। রমজান মাসে ভাল দাম পাওয়ার আশায় মৌসুমের আগেই আগাম তরমুজ বাজারজাত করেছে কৃষকেরা।
তবে পাইকারি বাজারে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন কৃষকেরা। কৃষকেরা বলছেন গত বছরের তুলনায় অর্ধেক দামে পাইকারি বাজারে আড়ৎদারদের কাছে তরমুজ বিক্রি করছেন তারা।
রোববার (৩ মার্চ) বরিশালের পাইকারী ফলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে বড় সাইজের ৭-৮ কেজি ওজনের ১০০ পিচ তরমুজ পাইকারী বাজারে কৃষকদের থেকে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা ও মাঝারি সাইজের ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের ১০০ পিচ তরমুজ ছয় হাজার টাকা বা তার থেকেও কমে ক্রয় করছেন আড়ৎদাররা।
ভোলার চরফ্যাশন থেকে তরমুজ নিয়ে আসা মিজান নামে এক কৃষক জানান, এ বছর তরমুজের দাম ভালোনা। গত বছর যে তরমুজ ২৫ হাজার টাকা ছিল এ বছর সেই তরমুজ ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। এতো কম দাম থাকলে আমরা কৃষকরা চলতে পারবোনা।
আরো এক কৃষক জানান, আগাম ফসল লাগানোর কারনে ফলন কম এসেছে। গত সপ্তাহে যে তরমুজ ৪ হাজার টাকা ছিল এই সপ্তাহে তা দাম কমে তিন হাজার হয়ে গেছে। মাত্র একহাত ঘুরেই এইসব তরমুজের দাম খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুনেরও বেশি দামে।
৫ কেজি ওজনের একটি তরমুজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা দরে। ক্রয় ক্ষমতার বাইরে থাকায় দাম শুনে কিনতে সাহস পাচ্ছেনা ক্রেতারা। বরিশালের চৌমাথা এলাকায় তরমুজ কিনতে আসা একজন ক্রেতা জানান, পাঁচ কেজি ওজনের একটি তরমুজ দোকানদার দাম চাইছে ৭০০ টাকা আমি বলছি সাড়ে ৩০০ টাকা। তিনি আরো বলেন, তরমুজটির দাম সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা হলে ঠিক ছিল। এরকম আকাশ ছোঁয়া দাম থাকলে আমরা সাধারন মানুষ কিনে খেতে পারবোনা।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন আড়ৎ থেকে বেশি দামে মাল কেনায় বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। বর্তমানে বাজারে সিন্ডিকেটের কারনে প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে জনমনে অস্বস্তি বিরাজ করছে।
কৃষকরা দাম পাচ্ছেনা ক্রেতারা কিনতে পারছেনা। তাহলে লাভের টাকা যাচ্ছে কাদের পকেটে এমন প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা।
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকারের বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালক অপূর্ব অধিকারী বলেন, বাজারে সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। কোন ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় অসৎ উপায় অবলম্বন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।