জুড়ীতে এক সপ্তায় ১৮ গরু চোরি আতঙ্কে এলাকাবাসী
খোর্শেদ আলম ,জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ।
০৫ মার্চ ২০২৫, ১৬:১৩ পিএম
-67c823b32ed94.jpg)
ছবিঃ সংগৃহীত।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ২নং পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের দূর্ঘাপুর থেকে এক রাতে ১৩টি, পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের বাছিরপুর থেকে ১টি ও জায়ফনগর ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রাম থেকে ৪ টি সহ মোট ১৮টি গরু চোরি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের দূর্ঘাপুর ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের বাছিরপুর ও শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ভবানীপুর এলাকায় এঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, দূর্ঘাপুর গ্রামের তানিম আহমেদ, আব্দুল মতলিব, রুবেল মুন্ডা, বাছিরপুর গ্রামের তুহিন আহমেদ ও উত্তর ভবানীপুরের লাকি রাণী নামে ৫ জন মালিকের মোট ১৮টি গরু নিয়ে যায় চোর চক্র। পরে বিভিন্ন সন্ধেহ মূলক স্থানে তল্লাশি করে কোন সন্ধান পায়নি তাঁরা। এ ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় খামারী সহ পুরো এলাকাবাসী। গরু চোরির এ ঘটনায় সোমবার (০২ মার্চ) জুড়ী থানায় একটি সাবধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন তাঁরা।
চোরি হওয়া গরুর মালিক তানিম আহমেদ জানান, আমাদের বড় একটি সম্বল ছিল গরু একদিনে সব নিয়ে গেলো। আমাদের গাভী সদ্য একটি ছোট বাছুর দিয়েছে এটি রেখে মা নিয়ে গেছে। এটি একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা এখন ছোট্র বাছুটি বাঁচানো কঠিন!
এদিকে এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উঠেছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। জামিল আহমদ নামে একজন ব্যক্তি ফেসবুকে মন্তব্য করেন, জুড়ীতে গরু চোরের মদদ দিচ্ছে কারা? জুড়ীর প্রশাসন জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে কেন? মানুষের নাকের ডগা থেকে লাখ টাকার গরু নিয়ে যায়। অথচ চোরের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না! এভাবে ঘর ডাকাতি, গরু চুরি, ছাগল চুরি হলে মানুষ কিভাবে জীবনযাপন করবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো প্রধানত ক্ষেত ও খামার নির্ভর। এরা যদি একটি গরু, ছাগল লালন পালন করে ধরে রাখতে না পারে কিভাবে বাঁচবে। জুড়ীর মানুষের এখানে দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় নি। চোরের বিরদ্ধে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে হলেও প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। চোরের মূল শেকড় উপড়ে ফেলতে হবে।
এবিষয়ে তোফায়েল আহমদ নামে আরেকজন মন্তব্য করেন, গরু হলো কৃষকের লাল টুকটুকে একটি স্বপ্ন। এই গরু যখন চুরি হয় কৃষক আর্থিক ভাবে শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হয় না বরং সেই সাথে সেই লাল টুকটুকে স্বপ্নটুকুও চুরি হয়ে যায়। যেমন রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙ্গালের ধন চুরি! বিগত সরকারের সময় গরু চোরদের বিরুদ্ধে আঙুল ঈশারা করা দুরূহ ছিলো। আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পর আমরা মুক্তি পেয়ে যাবো, মুক্তি পেয়েছি বটে কিন্তু যতখানি চেয়েছিলাম ততখানি নয়! গরুচোর'রা সর্বশক্তি নিয়ে যেন ফিরে এসেছে। হয়তো তারা কেবলা পরিবর্তন করে হারানো শক্তি সঞ্চয় করেছে। এদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের মতো একটি বৃহৎ শক্তিকে পরাজিত করতে পেরেছে, ঐক্যবদ্ধ ভাবে যদি আমরা প্রতিরোধ তৈরি করি তাহলে হয়তো বাঁচবে কৃষক, বাঁচবে কৃষকের লালিত স্বপ্ন।
২ নং পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহেল উদ্দিন বলেন, আমার ইউনিয়নে তেমন কোন বড় ধরনের সমস্যা নেই। আপনারা জানেন ইতিমধ্যে গরু চোরের উপদ্রব একটু বেড়ে গেছে। বিভিন্ন ভাবে গরু চোরের একটি চক্র আবারও মাথা ঝাড়া দিয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার পূর্বজুড়ী ইউনিয়নে আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে গরু চুরির বিষয়টি শূন্যের কোটায় নিয়ে আসছি। তবে, বিগত সময়ে যারা গরু চোরির সাথে জড়িত ছিল তারা আবার এমন পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে। আমার এলাকাবাসী নিয়ে প্রশাসনের সহযোগীতায় পূর্বজুড়ী তথা জুড়ী উপজেলাকে আবারও চোর মুক্ত করবো।
জুড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম বলেন, পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের যে গরু চুরির বিষয়টা আসলে আমি জানি না দেখতে হবে। গরু চুরির বিষয়ে পুলিশ মাঠে কাজ করছে। গরু চুর পাহারা দিতে হবে জনগনকেও আজকে একজন আসামীকে আটক করে চালান দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় গরু চুর ধরে চালান দিলে জামিন হয়ে যায়।
