৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে যারা অপরাধী পুলিশ তাদের বিচারের আওতায় এনে ও সরিয়ে দিয়ে পুলিশকে আবার স্বগৌরবে ফিরে আনা। সেই সাথে সক্ষম করে তোলা ও পুলিশকে আবার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে আমরা চেষ্টা করছি বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বিপিএম।
আজ (৬ মার্চ) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় দপ্তরের হলরুমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় আয়োজিত দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবধিকার ও পরিবেশের উপর গুরুত্বসহ আইনপ্রয়োগ বিষয়ক কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, বর্তমান সময়ে দেশে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে মানুষের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এটা আবেগের বিষয়, তাই হয়তো তাদের অতীত স্মৃতি মনে করে দেয়, যখন পুলিশ অন্যায়ভাবে মানুষের ওপর আক্রমণ করেছে। অন্যায় আচরণ করেছে এবং গণবিরোধী আচরণ করেছে। সময় বদলেছে, তাই নাগরিক সমাজের প্রতি আমার অনুরোধ পুলিশকে আপনারা কাছে টেনে নিন এবং তাদেরকে কাজ করতে সহায়তা করুন।
তিনি বলেন, অনেক মামলা হয়েছে। যেখানে ৫ আগস্টের পরে যথাযথভাবে মামলা রুজু হয়নি। একই ঘটনায় কয়েকটি মামলা হয়েছে, আবার শহীদের ঘটনায় আমরা পোস্টমর্টেম করতে পারিনি উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, একটি ঘটনা আমাকে নাড়া দিয়েছে। একজন বলছিল যে, জুলাই বিপ্লবের সময় শহীদদের উন্মুক্তভাবে কবর দেওয়া কঠিন ছিল। অনেক মা তার সন্তানকে ঝোপ-ঝাড়ে, জঙ্গলে কবর দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, অনেকে তার ছেলে শহীদ হয়েছে, সেই বিষয়টিও বলতে পারেননি। কারণ বলতে গেলে তার ওপর অত্যাচার নেমে আসবে যে কেন তোমার ছেলে আন্দোলনে গিয়েছিল। কাঁদতেও পারেনি, কাঁদার স্বাধীনতাও ছিল না। যেখানে কবর দিতেই পারছে না সেখানে হাসপাতালে নিয়ে ময়নাতদন্ত করা অকল্পনীয়। এখন এসব মৃত্যুর সুবিচার ও ন্যায়বিচার দিতে হলে আমরা যদি আইনের প্রতি অক্ষরের দিকে চিন্তা করি যে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন নেই তাহলে এ জাতির প্রতি, আন্দোলনের প্রতি, শহীদদের প্রতি আমরা হয়তোবা ন্যায়বিচার করতে পারব না। এ বিষয়ে এখানে উপস্থিত অ্যাটর্নি জেনারেল বিস্তারিত বলবেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বন জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। কর্মশালায় অংশ নেন বিভাগের আট জেলার বিচারক, পাবলিক প্রসিকিউটর, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।