হাতের নিপুন ছোঁয়ায় মাটি ঘুরিয়ে তৈরী হচ্ছে মাটির তৈজসপত্র। শুরুতে এটেল মাটি সংগ্রহের পর ভাল করে মাখিয়ে ময়দার মতো প্রস্তুত করা হয় মাটি। এরপর মাখানো মাটি গুলো জিনিস অনুযায়ী পালায় ওজনের পর বিশেষ উপায়ের এই মাটি একটি গোলাকৃতির চাকের মধ্যে বসিয়ে শুরু হয় পন্য বানানোর কাজ।
কেউ গোকৃতির চাক হাতে ঘুরিয়ে আবার কেউ কেউ মটর সেট করে তার উপরে তৈরি করছেন মাটির নানা ধরনের জিনিসপত্র। মাটিকে তৈজসপত্রে রুপ দেয়ার পর সেগুলো রোদে শুকিয়ে আগুনে পুড়িয়ে তৈরী হয় মাটির এসব জিনিসপত্র।
এভাবেই মাটি দিয়ে তৈরি হয় হাঁড়ি, কলসি, পিঠা বানানোর সাজ, মাটির ব্যাংক ও মশার কয়েল রাখার পাত্রসহ নানা ধরনের বাহারী জিনিসপত্র।
স্থানীয় পাইকারী ব্যবসায়ীরা কুমারদের বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যায় মাটির এসব জিনিসপত্র। আবার কেউ কেউ এখান থেকে কিনে নিয়ে গ্রামে গিয়ে হেঁটে হেটে বিক্রি করেন। তবে জাহাজে করে এখানকার তৈরী মাটির বাহারী এসব জিনিস পত্রের বেশিরভাগ চলে যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
তবে জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরী জিনিসপত্র। বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাল পাড়া গ্রামের প্রায় সাড়ে ছয়শত পরিবার পূর্ব পুরুষের পেশাকে ধরে রেখেছেন আজও।
তবে মাটির তৈরী জিনিস বিক্রি করে ছয়মাস ভাল চললেও বাকি ছয়মাস কষ্টে চলে বলে জানান কারিগররা। সুদেব পাল নামে একজন কুমার জানান, আমরা সাড়ে ছয়শত পরিবার এখানে মাটির জিনিসপত্র তৈরী করি। জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির ফলে দিন দিন এই পেশা থেকে আগ্রহ হারাচ্ছে মানুষ। এভাবে চললে ভবিষ্যতে এ পেশা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
অরুন নামে আরেকজন বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষরা সবাই এই পেশার ছিল। আজ পর্যন্ত আমরা উন্নতির মুখ দেখতে পারিনি। আমাদের অর্থ সংকটে লোন নিয়ে কাজ করতে হয়। সরকারীভাবে সাহায্য সহযোগিতা পেলে এ পেশাকে ভবিষ্যতে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।
মাটির এসব জিনিসপত্র টিকিয়ে রাখতে সরকারী সাহায্য সহযোগিতার দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।