কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে লাখো রোহিঙ্গার সাথে ইফতার করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) ২০ নম্বর এক্সটেনশন ক্যাম্পের হেলিপ্যাড এলাকায় এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। জেলা শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিব।
এরপর জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। তিনি ক্যাম্প-১৮ তে লার্নিং সেন্টারে শরণার্থী ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং ইউনিসেফ ও ডব্লিউএফপি’র পক্ষ থেকে খাদ্য পরিস্থিতি তুলে ধরা তথ্য প্রজেকশন অবলোকন করবেন। পরে রোহিঙ্গা কালচারাল মেমোরি সেন্টার পরিদর্শন ও সাংবাদিকদের ব্রিফিং করবেন।
সন্ধ্যায় ক্যাম্প-২০ এক্সটেনশন হেলিপ্যাড এলাকায় প্রধান উপদেষ্টার আয়োজনে লক্ষাধিক রোহিঙ্গার জন্য ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারে জুমার নামাজ আদায়সহ নির্ধারিত কর্মসূচি শেষে ইফতার মাহফিলে যোগ দেবেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ঘিরে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন বুনছে রোহিঙ্গারা। তাদের নেতারা মনে করেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা পেলে তারা স্বদেশে ফিরে যেতে পারবে।
তারা তাদের প্রত্যাশার কথাও তুলে ধরতে চান জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছেই। একই সঙ্গে, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) খাদ্য সহায়তা কমানোর বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করতে চান।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, জাতিসংঘের মহাসচিব উখিয়া বালুখালী আশ্রয় শিবিরের একটি লার্নিং সেন্টার ও ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন। এছাড়া, রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা, তরুণ ও নারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সর্বশেষে, রোহিঙ্গাদের সাথে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ ইফতার করবেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টার সফর ঘিরে জেলা জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ এলাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বর্তমান বসবাস করছেন। নানা জটিলতার কারণের দীর্ঘ আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি । তারমধ্যেই উল্টো গত কয়েক মাস ধরে নতুন করে ৬০ থেকে ৭০ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায়।