× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন

‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার বিচার চাই এখনই’

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো

১৬ মার্চ ২০২৫, ১৭:২৭ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

সম্প্রতি সারা দেশে নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করাসহ সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে রংপুরে মানববন্ধন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে রোববার (১৬ মার্চ) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির  আয়োজন করে সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাক। এতে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

‘নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা; বিচার চাই এখনই’ স্লোগানে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সনাক রংপুর সভাপতি ড. শাশ্বত ভট্টাচার্য। অন্যান্যের মধ্যে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ব্লাস্ট রংপুরের কো-অর্ডিনেটর ও সনাক সদস্য অ্যাডভোকেট দিলরুবা রহমান, স্বর্ণনারী এসোসিয়েশনের সভাপতি মঞ্জুশ্রী সাহা, সনাক সদস্য অ্যাডভোকেট এ এ এম মুনীর চৌধুরী প্রমুখ।  

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রংপুরের মিঠাপুকুরসহ বেশ কিছু জায়গায় ধর্ষণের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।  এচিত্র শুধু রংপুরে নয় সারা দেশের কোথাও না কোথাও প্রতিদিনই ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি এমন দিকে যাচ্ছে যেন শিশু ও নারীরা কারো কাছেই নিরাপদ নয়। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে বিবেকবান মানুষদের জাগতে হবে। সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। তা না হলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই যাবে।

বক্তারা আরও বলেন, দেশে নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতন ও ধর্ষণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ঘরে-বাইরে, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্রই এর ভয়াবহ শিকার হচ্ছেন কন্যাশিশুসহ সকল বয়সী নারী। নৃশংসতার মাত্রা ও সংখ্যা বিবেচনায় সারা দেশে নারীর প্রতি সহিংসতায় দেশবাসী আতংকগ্রস্থ সময় অতিবাহিত করছে। আছিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে যেমন ভয়ে শিহরিত হয়েছি আমরা। এখনো সেই পরিস্থিতি আছে, আমাদের নিরাপত্তার সমস্যা আছে। আমরা এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ চাই, সমাধান চাই।

সনাক সভাপতি ড. শাশ্বত ভট্টাচার্য বলেন, গত জানুয়ারি মাসে ৩৯ জন নারী এককভাবে এবং সঙ্গবদ্ধভাবে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষকের হাত থেকে নারী, শিশু এমনকি বৃদ্ধারাও নিরাপদ নয়। এটা এক ধরনের ব্যধিতে পরিণত হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে অবিলম্বে নিপীড়নকারী, ধর্ষক ও সমাজবিরোধীদের প্রতি শূণ্য সহিঞ্চুতা প্রদর্শন করাসহ দ্রুত বিচারের আওতায় এনে সর্বাচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। ।

মানববন্ধনে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জেন্ডার সমতা, নারীর ক্ষমতায়নে সনাক, ইয়েস, এসিজি ও টিআইবি’র পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।

 দাবিসমূহ হলো : ১. বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও নতুন বাংলাদেশের মূল চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং সবধরনের যৌন নির্যাতন, সহিংসতা ও বৈষম্য প্রতিহত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, অপরাধের সাথে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবারকে সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করা।
২. সকল ক্ষেত্রে ও পর্যায়ে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংস্কার ও বিদ্যমান আইনসমূহের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রসহ সকল পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে নারীর নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করা।
৪. সকল রাজনৈতিক দল ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠন, পেশাজীবী সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নারী-পুরুষের সমঅধিকার ও সমমর্যাদার সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ঘোষণাসহ চর্চা প্রতিষ্ঠার সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
৫. টেকসই উন্নয়ন অর্জনের কর্মপরিকল্পনায় অভীষ্ট-৫ (জেন্ডার সমতা) ও ১৬ (শান্তি, ন্যায়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান) কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধের পূর্বশর্ত হিসেবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণসহ আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা ও নানা অজুহাতে যত্রতত্র হেনস্থা রোধে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি রাষ্ট্রকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন।
৬. নারী ও শিশু নির্যাতনসহ সকল প্রকার নারী অধিকার হরণের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ করে প্রশাসন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচারব্যবস্থায় দুর্নীতি প্রতিরোধ, শুদ্ধাচার, জবাবদিহিতা ও সার্বিক সুশাসন নিশ্চিত করা।
৭. জেন্ডার সমতা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে নারীর অভিগম্যতা নিশ্চিত, ইন্টারনেট ও প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সুলভ করা এবং বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। অনলাইনে সহিংসতা ও নির্যাতন থেকে নারীর সুরক্ষা নিশ্চিতে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিশেষায়িত জাতীয় কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
৮. যে সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাঙ্গনে বা সমাজে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ্যে কাজ করছেন- তাদের উৎসাহিত, সঠিক প্রশিক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা ও সুরক্ষা প্রদান করা।  
৯. মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে সকল প্রতিষ্ঠানে অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখার নিশ্চয়তাসহ নারীবান্ধব অভিযোগ প্রদান ও নিরসনের ব্যবস্থা থাকতে হবে; নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি বন্ধে ব্যক্তির রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক অবস্থান, মর্যাদা ও প্রভাব বিবেচনা না করে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলাগুলোর দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করা।
১০. নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ ও নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতে সাধারণ জনগণের ইতিবাচক মানসিকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কার্যকর প্রচারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা।  
১১. জাতীয় হেল্পলাইন ও অভিযোগ জানানোর হটলাইন নম্বরগুলোর প্রচার ও কার্যকরতা বৃদ্ধি।  

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.