মৌলভীবাজারে
১২ বছর পর ফের শুরু হয়েছে
আর্সেনিকের মাত্রা নির্ণয়ের কার্যক্রম। এ সংক্রান্ত প্রচার
না থাকায় সাধারণ মানুষ জানেন না টিউবওয়েলের পানি
আর্সেনিকমুক্ত কি না। এমনকি
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও না জেনে পান
করছে সেসব বিষাক্ত পানি।
এ
অবস্থায় সচেতন মহল দ্রুত জেলায় আর্সেনিকের সঠিক চিত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন।
দীর্ঘ
১২ বছর ধরে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে আর্সেনিকের
প্রাদুর্ভাব দেখা
দিয়েছে। তবে বর্তমানে আবার আর্সেনিক
নির্ণয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
জেলা
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে একবার ও ২০০৯ সালে
জেলার আংশিক এলাকায় আর্সেনিকের মাত্রা নির্ণয়ে জরিপ হয়। বর্তমানে মৌলভীবাজারের সাত উপজেলার ৬৭ ইউনিয়নে জরিপের
উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় দুই হাজার ৫০০টি করে ১ লাখ ৬৭
হাজার ৫০০ টিউবওয়েলে আর্সেনিক পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন সদরসহ পাঁচ উপজেলায় জরিপ চলছে। এর মধ্যে জুড়ি
ও বড়লেখা উপজেলায় আগামী মাসে জরিপ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট
সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ইউনিয়নে দুজন করে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা প্রতিটি বাড়ি গিয়ে জরিপ করছেন। উন্নত ডিভাইস দিয়ে জেলার সার্ভারে সেই তথ্য পাঠাচ্ছেন। পাশাপাশি যেসব টিউবওয়েলে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাচ্ছেন, সেসবে লাল রঙের প্রলেপ দিচ্ছেন। জনগণকে সেই টিউবওয়েলে পানি পান না করার পরামর্শ
দিচ্ছেন।
মৌলভীবাজার
সদর উপজেলার এক স্কুলশিক্ষক আফজাল
হোসেন এ বিষয়ে সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন, ‘দীর্ঘ এক যুগ পর
স্কুলে একটি টিউবওয়েল পেলাম। জানতে পেরেছি মোস্তফাপুর ও নাজিরাবাদ ইউনিয়নের
প্রায় টিউবওয়েলে উচ্চমাত্রার আর্সেনিক রয়েছে। আমার স্কুলের রেজাল্টের একটি কপি সংশ্লিষ্ট পরীক্ষক আমাকে দিলেন এবং পানি পান না করার জন্য
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বললেন।’
মৌলভীবাজার
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদুজ্জামান জানান, জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৮ হাজার টিউবওয়েলের
পানিতে আর্সেনিকের পরীক্ষা হয়েছে। জেলার পুরো চিত্র জানতে আরও পাঁচ-ছয় মাস লাগবে।
মৌলভীবাজার
সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দীন মোর্শেদ জানান, দীর্ঘ সময় আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করলে বিভিন্ন সমস্যা ও রোগ দেখা
দেয়। হাতে-পায়ে কালো ফোসকা পড়ে ঘা হয় এবং
একধরনের গুটি দেখা দেয়। এতেই আর্সেনিক যুক্ত কিনা স্বাভাবিক ভাবে নির্ণয় করা সম্ভব।