ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার চার লেনের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন না হওয়ায় এবার ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষ ভোগান্তিতে পরতে পারে বলে জানান গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।
এদিকে, ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্নে স্বস্তিদায়ক করার লক্ষ্যে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন ও যমুনা সেতু সাইট অফিসের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই ঈদে মহাসড়ককে ৪টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। এতে মহাসড়কে সাড়ে ৭’শত পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে। লিংক রোডগুলোতে বাঁশ কল বসানো হবে। পুলিশের পাশাপাশি টাঙ্গাইল শ্রমিক ফেডারেশন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও কাজ করবে।
পরিবহন চালকরা জানান, ঈদ এলেই মহাসড়কে তড়িঘড়ি করে কাজ শুরু করা হয়। এতে গাড়ির গতি ঠিক থাকে না এবং এ ধরণের রাস্তায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মহাসড়কের চার লেনের কাজ শেষ হয়েছে। এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত চার লেনের কাজ চলমান রয়েছে। এর ফলে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যমুনা সেতুতে টোল আদায়ের সফটওয়ারে সমস্যার কারণে টোল আদায় দীর্ঘক্ষণ বন্ধ এবং সেতুর উপর দীর্ঘ সময় গাড়ি আটকা থাকলে যানজট হয়। যমুনা সেতু পশ্চিম প্রান্তে সিরাজগঞ্জের অংশে গাড়ি ঠিক মতো পাস না হয় তাহলে যানজটের শঙ্কা রয়েছে। গত কয়েক ঈদেও সিরাজগঞ্জের প্রান্তের গাড়ি ঠিক মতো পাস হওয়ার কারণে যমুনা সেতুতে টোল আদায় বন্ধ থাকে। ফলে টাঙ্গাইলের অংশে দীর্ঘ যানজট হয়। ঈদযাত্রায় যমুনা সেতুর উপর যেন কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ও যানজট না হয় সে লক্ষ্যে ১৯টি পদক্ষেপ নিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের এলেঙ্গার পর থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। ঈদ উপলক্ষ্যে অতিরিক্ত শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। উত্তরবঙ্গগামী লেনে পুরোদমে কাজ চলছে। বিশেষ করে ব্রিজের কাজ দ্রুত গতিতে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে চার লেন বাস্তবায়ন প্রকল্পের আবদুল মোনেম লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার রবিউল আওয়াল জানান, এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত মহাসড়কের সাড়ে ১৩ কিলোমিটারের ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে ঈদের আগেই মহাসড়কের এই অংশের উত্তরঙ্গগামী পুরো লেন চলাচলের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্নে স্বস্তিদায়ক যাত্রা করতে ১৯টি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য যমুনা সেতু দিয়ে সার্বক্ষণিক টোল চালু রাখার চেষ্টা করা হবে। এবার সেতু পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের ১৪টি বুথ দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হবে। এর মধ্যে ৪টি করে উভয় প্রান্তে ৮টি বুথে ফাস্ট ট্রাক লেন এবং মোটরসাইকেলের জন্য ২টি করে আলাদা ৪টি বুথ থাকবে।
টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় করা হয়েছে। যানজট নিরসনে মহাসড়কের টাঙ্গাইলের অংশে ৬৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জেলা পুলিশের সাড়ে ৭’শত সদস্য দায়িত্ব পালন করাসহ মোবাইল টিম ও প্রিকেট টিম কাজ করবেন।
তিনি আরও জানান, আগামী ২৫ মার্চ থেকে পুলিশ মহাসড়কে ২৪ ঘণ্টা কাজ করবে। ঈদের পরেও যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। আশা করি এবার মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হবে না।