বাংলাদেশের মেঘের রাজ্য সাজেক এবারও ঈদের আনন্দে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। তবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ফলে বর্তমানে পর্যটক শূন্য অবস্থা বিরাজ করছে। অনেকের ধারণা, সাজেক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এখনো সাজেকের প্রায় ২,০০০ থেকে ২,৫০০ পর্যটক ধারণ ক্ষমতা রয়েছে, এবং ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের ব্যাপক সাড়া মিলছে।
সাজেকের রিসোর্ট ও কটেজ মালিকরা জানিয়েছেন, এবারের ঈদ উপলক্ষে আগাম বুকিং ভালোই হয়েছে। ইতোমধ্যেই বেশিরভাগ রিসোর্ট ও কটেজ বুকিং হয়ে গেছে, যা বোঝায় যে সাজেকের প্রতি পর্যটকদের আগ্রহ অটুট রয়েছে।
সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ বলেন, সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের কারণে কিছু মানুষ মনে করছেন সাজেক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এটা ভুল ধারণা। সাজেকের অনেক রিসোর্ট এখনো চালু আছে এবং পর্যটকদের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
কুঁড়েঘর রিসোর্টের মালিক হেলাল বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমাদের রিসোর্টে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করছি। বর্তমানে সাজেক একটু ফাঁকা থাকলেও, ঈদের সময়ে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে বলে আশা করছি। ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের সুবিধার্থে কিছু রিসোর্ট নতুনভাবে সাজানো হয়েছে এবং বিশেষ ডিসকাউন্টও দেওয়া হচ্ছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে সাজেকের রুইলুই পাড়া এলাকায় একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যাতে প্রায় ১৪০টি রিসোর্ট, কটেজ, দোকান ও বসতবাড়ি পুড়ে যায়। তবে, অনেকের ভুল ধারণা আছে যে পুরো সাজেকই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, যা সঠিক নয়। এখনো সাজেকে অসংখ্য রিসোর্ট ও কটেজ চালু রয়েছে এবং পর্যটকদের জন্য থাকা-খাওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা বিদ্যমান।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক আব্দুল মোমিন বলেন, প্রথমে শুনেছিলাম যে সাজেক নাকি পুরোপুরি শেষ। পরে যখন রিসোর্টে ফোন দিলাম, তখন জানলাম এখনো অনেক কিছু সচল রয়েছে। এসে যদিও বা কিছুটা ভালো লাগছে, তবে রমজান উপলক্ষে পর্যটক শূন্য।
রেস্টুরেন্ট এর মালিকদের মতে, প্রত্যেক বারের মতো এবারও সাজেকে পাহাড়ি ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন বাঁশের ভেতর রান্না করা মাংস, চাকমা-মারমা খাবার ও বিশেষ আদিবাসী খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি কাটিয়ে সাজেক আবারও তার পুরনো জৌলুস ফিরে পাচ্ছে। যারা মনে করছেন সাজেক শেষ, তাদের জন্য বার্তা হলো – সাজেক এখনো পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত! রিসোর্ট ও কটেজ মালিকদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং পর্যটকদের ভালোবাসায় সাজেক প্রস্তুত ঈদের আনন্দে ভাসতে। পর্যটকদের ঢল নামবে পাহাড়ি পথে, আর মেঘের রাজ্য সাজেক হয়ে উঠবে আরও প্রাণবন্ত, আরও আকর্ষণীয়।