ছবিঃ সংগৃহীত।
ডুমুরিয়া উপজেলার অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে টাঙ্গানো নেই মুল্য তালিকা। ভোক্তা অধিকারের নেই কোন তদারকি। প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতারা।
প্রতি বছর রমজান মাস এলেই সাধারণ ক্রেতাদের দুর্ভোগের যেন কোন অন্ত নেই। ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামত নিত্যপণ্যের দাম হাকাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে নিত্যপন্যের মূল্য তালিকা টানানোর সরকারি বিধান থাকলেও তোয়াক্কা করছেনা ব্যবসায়ীরা। বর্তমান বাজার দর ও মূল্য তালিকা নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগের কোন শেষ নেই। রমজান মাস আসলেই নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি পণ্যের চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পায় মূল্য।
ডুমুরিয়া উপজেলার ডুমুরিয়া, খর্ণিয়া, কাঁঠালতলা, চুকনগর, শোলগাতিয়া,মিকশিমিল,শাহপুর বাজার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই টাঙ্গানো নেই মূল্য তালিকা। এর মধ্য অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্যর মূল্য তালিকার বোর্ড থাকলেও উল্লেখ নেই দর । হাতেগোনা কয়েকটি দোকানে টাঙ্গানো রয়েছে মূল্য তালিকা।
চুকনগর বাজারে আসা জনি সরদার নামের এক ক্রেতা বলেন, মুদির দোকান থেকে শুরু করে মাছ, মাংসের কোন দোকানে মূল্য তালিকা নেই। তালিকা থাকলে দোকানীরা বেশি দামে বিক্রি করতে পারে না। সে জন্য দোকানীরা মূল্য তালিকা টাঙ্গিয়ে রাখে না। আর এগুলো যাদের দেখার কথা তারাও নিয়মিত তদারকি করেনা। এ কারণে ব্যবসায়ীরাও মূল্য তালিকা টাঙ্গানোর তোয়াক্কা করেনা। সবার আগে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই নিত্যপন্যের দাম ঠিক থাকবে।
চুকনগর বাজারের ক্রেতা হাবিবুর রহমান গাজী বলেন, অনেক দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা থাকলেও সে অনুযায়ী দাম রাখা হয় না। দাম নিয়ে দোকানদারদের সাথে ঝগড়া করতে হয়।
কাঁঠালতলা বাজারের আসা রিপন নামের এক ক্রেতা বলেন,বাজারে মোবাইল কোর্ট এলে দোকানদাররা মূল্য তালিকা বের করে সামনে ঝুলিয়ে রাখে। মোবাইল কোর্টের অফিসাররা চলে গেলে দোকানদাররা আবার মূল্য তালিকা খুলে রাখে।
নাম প্রকাশ না করার স্বত্বে ডুমুরিয়া, খর্ণিয়া, কাঁঠালতলা, চুকনগর, শোলগাতিয়া,মিকশিমিল,শাহপুর বাজারের একাধিক মুদি দোকানী বলেন, মূল্য তালিকা আছে,তবে প্রতিদিন টাঙ্গানো হয় না। তারা বলেন, মূল্য তালিকা দিয়ে কি হবে ? ক্রেতারা এগুলো দেখে না। মূল্য লেখা থাকলেও দরদাম করেই পণ্য কেনে। আমাদেরও দামাদামি করেই পণ্য বিক্রি করতে হয়। যার জন্য মূল্য তালিকা টাঙ্গানো হয় না।
চুকনগর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ সাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রত্যেক দোকানদারকে সহজে দেখা যায় এমন স্থানে বাধ্যতামূলকভাবে মূল্য তালিকা টানাতে হবে। তা না হলে বাজার বণিক সমিতির পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চুকনগর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সরদার বিল্লাল হোসেন বলেন,প্রত্যকটি দোকানে মূল্য তালিকা টানাতে হবে। মূল্য তালিকা টানানো না হলে তার দায়-দায়িত্ব দোকানদারকে নিতে হবে। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে চুকনগর বাজারের প্রত্যক দোকানদারকে মূল্য তালিকা টানানোর জন্য বলা হয়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, মূল্য তালিকা না থাকায় ইতিমধ্যে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনেক দোকানদারকে জরিমানা করা হয়েছে। তবে অতিদ্রুত মোবাইল কোর্ট বসিয়ে আবারও অভিযান চালানো হবে।
জানা যায়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৩৮নং ধারা অনুযায়ী, দোকান বা প্রতিষ্ঠানে সহজে দেখা যায় বা বোঝা যায় এমন স্থানে মূল্য তালিকা টাঙানো না হলে বা প্রদর্শন করা না হলে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদন্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু এ বিধান শুধু কাগজে-কলমেই শোভা পাচ্ছে। বাস্তবে তার কোন প্রয়োগ নেই বললেই চলে। যার ফলে সঠিকভাবে অনেকেই মানছে না নিত্যপণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শনীর সরকারি নিদের্শনা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh