× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

জীবন যুদ্ধে হার না মানা মনোয়ারা, এলাকাবাসীর কাছে সফল ব্যবসায়ী

লায়ন কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩:৪৩ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

জীবন যুদ্ধে হার না মানা মনোয়ারা বেগম। তার মতে, দেশের সব নারীকে কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে আসা উচিত। লোকে  কী বললো তার দিকে না তাকিয়ে কাজ করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তার কর্মজীবনেও  প্রথম কাজ করতে তিনি অস্বস্তি বোধ করতেন। ভাবতেন লোকজন কে কী বলবে। এখন তার কাছে মানুষের কথা কিছু যায় আসে না। জীবন যুদ্ধে হার না মানা এ নারীর মতে, দেশের সব নারীকে কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে আসা উচিত।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের নতুন গোবর ধানের কুঠি গ্রামের গৃহবধু মনোয়ারা বেগম। পঞ্চম শ্রেনীতে পড়াশুনরা সময়ে তার বিয়ে দেয় বাবা-মা। তার জীবন জগৎ সম্পর্কে তার কোন ধারণাই ছিল না। শশুড় বাড়িতে যেয়ে গ্রামের শিশুদের সাথে খেলতে যেতো। গ্রামবাসীরা এ নিয়ে নানা কথা বললেও শিশু মনোয়ারা নীরবে সয্য করেছিল সব কিছু। সংসার কি জিনিষ কিছুই বুঝতেই পারেনি। স্বামীর অভাবের সংসারে নানা কষ্টে তার দিন কাটছে। কিছু বুঝে উঠার আগেই এক বছরের মধ্যেই এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। কন্যা সন্তানের কারণে প্রতিনিয়ত শশুড় বাড়ির মানুষদের কাছে অবহেলার স্বীকার হতেন মনোয়ারা। নীরবে সব অপমান সয্য করতো।  এরকম পরিস্থিতিতে তাকে এবং তার স্বামীকে শ্বশুর-শ্বশুরী আলাদা করে দেন। চরম কষ্টে পড়ে তাদের সন্তানকে নিয়ে।  এরপর স্বামী-সস্তান নিয়ে শুরু হয় মনোয়ারা বেগমের সংগ্রামী জীবন।

মনোয়ারা বেগম জানান, বিয়ের পর স্বামীর আয় রোজগার ছিল না। এমন অবস্থায় শ্বশুরবাড়ীর লোকজন সংসার আলাদা করে দিলে চরম কষ্টে পড়েছিলাম। এমন কি সন্তানের দুধ খাওয়ানোর টাকা ও ছিল না। স্বামী প্রতিদিন দিনমজুরীর কাজও পেতো না। মাঝে মধ্যে কাজ পেলেও ও প্রতিবেশীদের কাছে ধারদেনা করে চলতে হতো। এর পর স্বামীর দিনমজুরীর সামান্য টাকা আর আমার কাঁথা সেলাই করে যে আয় হতো তা দিয়েই কোনরকমে চলতো সংসার। একসময় কাঁথা সেলাই এর কিছু টাকা সঞ্চয় করে হস্তশিল্পের সেলাই মেশিন কিনে কাজ শুরু করি। একবছর পর সেলাই মেশিনের কাজের টাকা থেকে সংসার খরচ বাঁচিয়ে ১২ হাজার টাকা সঞ্চয় করি। সে বছরেই বাসার থাকার ঘরের একাংশে মুদি দোকান খুলে বসি। এসময় এলাকাবাসী সবাই আমার দোকান থেকে কেনাকাটা করে আমাকে সহযোগিতা করতো। এখন আমার মুদি দোকানে দৈনিক প্রায় ১ হাজার টাকা বিক্রি হয়। একজন সফল ব্যবসায়ী হিসাবে এলাকার লোকজন আমাকে সম্মান করে। আর আমার স্বামী এখন ঢাকায় একটি বিস্কিট কারখানায় শ্রমিকের কাজ করে। মেয়েটাকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছি। দুইজনের টাকায় সংসার বেশ ভালই চলছে।

মনোয়ারা বেগম আরও বলেন, গ্রামে মুদি দোকান খুলে বসায় কেউ কেউ আমাকে ভিন্ন চোখে দেখতো। বলতো নানা কথা। প্রথম প্রথম খুব কষ্ট পেলেও হাল ছাড়িনি। উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন এবং সংসারের অভাব আমাকে আজ সফলতার কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। তারমতে কোন পেশায় খারাপ নয়, কাজের প্রতি শ্রদ্ধা ও নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকলে সফলতা আসবে। প্রতিবেশী আনিসুল হক জানান মনোয়ারা বেগম আমাদের গ্রামের একজন সফল উদ্যেগক্তা। আশে পাশের অনেক পুরুষ মহিলা আসে। তার জীবনের নানা গল্প শোনে। এবং তারাও তাদের এলাকায় এমন উদ্যেগক্তা হয়ে কাজ করতে চায। সংসার থেকে অভাব দুর করতে চায়। মনোয়ারা ঐ সব মহিলাদের নানা ভাবে সহযোগীতা করে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.