রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপি'র দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধোঁয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটেছে। এ ঘটনায় পথচারী সাংবাদিক সহ ১৩ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন ৩ জন।
আজ শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে বদরগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় এ সময় পথচারী সহ হামলায়, জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারে সমর্থক বিএনপি কর্মী কালুপাড়া ইউনিয়নের কাঁচাবাড়ি এলাকার কলম উদ্দিনের ছেলে মোন্নাফ মিয়া (৬০), কাঁচাবাড়ি এলাকার, মিতু মিয়া (৪০) একই এলাকার মৃত আফসার আলী ছেলে শফিকুল ইসলাম (৫০), মধুপুর কালজনি এলাকার লাবলু মিয়া (৪৫) কাঁচাবাড়ি এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে জয়নাল আবেদীন (২৫), মৃত মোহাম্মদ আলী ছেলে মুন্না খান ও মংলু মিয়া গুরুতর আহত হলে আশংকা জনক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে রংপুর জেলার মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ফুয়াদ হোসেন বাংলাভিশনের ক্যামেরা ভার্সন সাইফুল ইসলাম মুকুলসহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের উপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরাও মোবাইল ফোন কেড়ে নেন মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থকরা। সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় বদরগঞ্জ সাংবাদিক পরিষদ হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ও ব্যবসায়ীরা জানান, দোকানপাটে হামলার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সকাল দশটায় মানববন্ধন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল একটি পক্ষ দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে মানববন্ধন করতে না দিয়ে ব্যবসায়ীদের ফাটিয়ে দিয়েছেন। এ সময় হামলাকারীরা ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের গাড়িসহ একাধিক দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কে বা কাহারা কার দোকানে হামলা ভাঙচুর করেছে এই বিষয় নিয়ে মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন ফেসবুকে অসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে নিয়ে নানান ধরনের কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস ও বক্তব্য দিয়ে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছেন। ওই প্রতিবাদ করতে গেলে মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আমার লোকজনকে আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে আমি হামলাকারী সহ মানিক চেয়ারম্যানের শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
গত বুধবার বুধবার বদরগঞ্জ পৌর শহরের শহীদ মিনার সংলগ্ন জাইদুল হকের বেঙ্গল ট্রেডার্স এ কালুপাড়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য বাবুর নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। এর প্রতিবাদে শনিবার সকাল ১০ টায় ব্যবসায়ীরা মানববন্ধনে আয়োজন করে এই মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক ও মোহাম্মদ আলী সরকারের দুই গ্রুপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ।
তবে এ বিষয়ে বদরগঞ্জ কালুপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক জানান গত ২ এপ্রিল বিকেলে বিনা কারণে জাহিদুল হকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালুপাড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইতিহাস বাবু ও তার দুলাভাই মনিরুজ্জামানের প্রায় ৩শত লোকজন নিয়ে জাহিদুল হকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট চালিয়ে ভাঙচুর করেন। ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সরোয়ার জাহান মানিক সহ আমরা বাধা দিতে গেলে তাদের লোকজন আমাদের উপর হামলা চালায়। ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙচুর ও হামলার প্রতিবাদে শনিবার সকাল দশটায় সকল ব্যবসায়ীরা মিলে মানববন্ধন আয়োজন করে। মোহাম্মদ আলী সরকার ও ইউপি সদস্য লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মানববন্ধনে হামলা চালায় এ ঘটনায় পথচারী সহ ১২ থেকে ১৩ জন আহত হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দাবী জানান।
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ পৌর বিএনপি'র সদস্য সচিব কমল লোহানী জানান আজকের দ্বন্দ্বটি তাদের ব্যক্তিগত এটা দলীয় কোন দ্বন্দ্ব নয় মোহাম্মদ আলী সরকার ও মানিক চেয়ারম্যান তারা পূর্বে থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দন্দে জড়িয়ে পড়তো তারই প্রতিফলন আজকের এই রক্ত ক্ষয়ই সংঘর্ষ। আমরা চাই না বদরগঞ্জে এরকম কোন ঘটনা ঘট। আজ তাদের কারণে বদরগঞ্জ বাসি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে কেউ ঘরের বাহিরে বের হতে পারছে না দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। পুলিশ প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এ কে এম আতিকুর রহমান জানান, বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য আমরা মাঠেই রয়েছি।
এ বিষয়ে যৌথ বাহিনীর ক্যাপ্টেন মেহেদী বলেন জানান, আমরা ঘটনাটি জানতে পেয়ে বদরগঞ্জ থানার সাথে যোগাযোগ করে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ঘটনাটি থামানোর জন্য ইতিমধ্যেই ঘটনা স্থল গুলোর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি আশা করি এরপর আর কোন ঘটনা ঘটবে না। এখানকার কিছু সিসি ক্যামেরা আমরা খোঁজ পেয়েছি। কারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত সিসি ক্যামেরা দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।