বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শৈলদাহ বাকপুরা নূরানী মাদ্রাসা ও এতিমখানায় হামলা ও নগদ অর্থ লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মাদ্রাসার পরিচালক চিতলমারী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে বলা হলেও চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এখনো অভিযোগ পাইনি তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন।
মাদ্রাসার পরিচালক ও চিতলমারি উপজেলা মুজাহিদ কমিটির ছদর (আমির) মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ জানান, ২০০১ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতি বছরের ন্যায় চলতি বছরের ২রা মে অত্র মাদ্রাসায় বাৎসরিক মাহফিলের দিন ধার্য করা হয়। মাহফিলের দাওয়াতকে কেন্দ্র করে ২রা এপ্রিল শৈলদাহ বাজারের নাসির উদ্দিনের দোকানের সামনে স্থানীয় জামায়াত নেতা আবুল হাসান ও হাজী জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে বাক বিতণ্ড হয়। একপর্যায়ে তারা আমাকে হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে।
পরিচালক আরো জানান, ৩রা এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে স্থানীয় মাওলানা এমদাদুল্লাহ, মাওলানা আবুল হাসান, হাজী জাহাঙ্গীর হোসেন সহ ১০-১২ জন জামায়াত নেতা কর্মী অত্র প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে বিভিন্ন আয় ব্যয়ের হিসাব চান। প্রতিষ্ঠানের সকল ফাইল ও কাগজপত্র বের করে দিতে বলেন। তাদেরকে জানানো হয় যে, ম্যানেজিং কমিটির পরামর্শ ছাড়া তারা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারবে না। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ ও হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করে। প্রতিষ্ঠানের আলমারির তালা ভেঙ্গে তারা মূল্যবান ফাইল, রশিদ ও মসজিদ নির্মাণের আনুমানিক ২ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়।
তারা নায়েবে আমিরে মুজাহিদিন মাওলানা মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমকেও প্রচুর গালি দিয়েছে এবং এখানে কোন মাহফিল হতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দিয়েছে। তারা আরো জানাই এলাকায় কোন ভিক্ষা করা যাবে না কালেকশন করা যাবে না।
এ ঘটনায় ওই সময় ৯৯৯ এ কল করলে পার্শ্ববর্তী বড়বাড়িয়া ক্যাম্প থেকে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। মাদ্রাসা কমিটি এবং স্থানীয়দের ও বিষয়টি জানানো হয়। তারাও মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়। ওই রাতেই চিতলমারী থানায় জামায়াত নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলাতলা ইউনিয়নের জামায়াত নেতা আবুল হাসান জানান, হাজী জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে তিনি মাদ্রাসায় গিয়েছিলেন। মাদ্রাসায় গিয়ে আয়-ব্যয়ের হিসাব চাওয়া হয়েছে। এ ধরনের কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে নাই বলেও জানান তিনি।
জামায়াতে ইসলামী চিতলমারী উপজেলা শাখার সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম নান্না বলেন, মাওলানা আবুল হাসান একটি মসজিদে ১৫ বছর যাবত ইমামতি করে। তার স্বভাব চরিত্র অত্যন্ত ভালো। তার বাড়ির কাছে মাদ্রাসা। অন্যান্য লোকদের সাথে সে ওই মাদ্রাসায় গিয়েছিল। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে খোঁজখবর নিয়েছি সে ওই ঘটনার সাথে কোনোভাবেই জড়িত নয়। মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামের লোকজন উল্লেখ করা হয়েছে। একটি পরিচ্ছন্ন ও সংঘটিত ইসলামিক দলকে তার এভাবে হেয় করা মোটেও ঠিক হয়নি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে চিতলমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন জানান, আমরা জানতে পেরেছি প্রতিষ্ঠানের কোন হিসাব নিকাশ অধ্যক্ষ প্রদান না করায় স্থানীয়রা মাদ্রাসায় গিয়ে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।