রংপুরের বদরগঞ্জে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে বিএনপির নিবেদিত কর্মী লাভলু মিয়া সরকার (৪৫) হত্যাকান্ডের ঘটনায় আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের ব্যর্থতার কারণে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠেনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে হুমায়ুন কবির মানিকের নেতৃত্বে শতশত নেতাকর্মী মিছিলে অংশ নেন। মিছিল থেকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক ও তার ছেলে তানভির আহমেদ তমালসহ সকল আসামীদের গ্রেপ্তার দাবি জানানো হয়।
মিছিল শেষে স্থানীয় শহীদ মিনারে পথসভায় বক্তব্য রাখেন, মামলার বাদী নিহতের ছেলে রায়হান কবির, বিএনপি নেতা আবুজার গাফ্ফারি মন্টু, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক(বহিস্কৃত) হুমায়ুন কবির মানিক, সুমন সরদার প্রমুখ। প্রতিবাদ সভা থেকে খুনিদের গ্রেপ্তার দাবি করা হয়।
গত শনিবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আলহাজ্ব লাভলু সরকার(৪৫) হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক তার ছেলে তমালসহ ১২জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। ঘটনার তিনদিন পর গত সোমবার এ হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এতে আরো ১৫০ জনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামী করা হয়েছে। মামলার বাদী হন হত্যাকান্ডের শিকার লাভলু সরকারের ছেলে রায়হান কবীর।
উল্রেখ্য ব্যবসায়িক বিরোধকে কেন্দ্র করে দোকানঘর ভাড়া নিয়ে পুরনো বিরোধ দলীয় কোন্দলে দ্বন্দ্বের বলি হন বিএনপির কর্মী লাভলু সরকার।
প্রতিবাদ সভা থেকে দাবি জানানো হয় খুনের ঘটনার মূল হোতারা প্রকাশ্যে ঘুরলেও তাদের প্রেপ্তার করা হচ্ছে না। মিছিলের স্লোগান থেকে বলা হয়, আমার ভাই কবরে, মানিক কেন বাহিরে, খুনিদের ফাঁসি চাই দিতে হবে। হৈ হৈ রৈ রৈ মানিক খুনি গেল কই। মানিকের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে। মানিকের গ্রেপ্তার চাই দিতে হবে বলে স্লোগান দেওয়া হয়।
ঘটনার সূত্রপাত শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-সংলগ্ন একটি দোকানঘরকে ঘিরে। দীর্ঘদিন ধরে দোকান মালিক ইশতিয়াক বাবু ও ভাড়াটিয়া ঢেউটিন ব্যবসায়ী জাহিদুল হক জোয়ারদারের মধ্যে দোকানঘর ভাড়ার মেয়াদ সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বিএনপি কর্মী লাভলু সরকার নিহত হন। এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিকের।
এদিকে হত্যাকান্ডের ঘটনার ঠিক আগের দিন, শহিদুল হক মানিকের ছেলে তানভির আহমেদ তমাল তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, ব্যক্তিগত আক্রমণমূলক স্ট্যাটাস দেন। এই স্ট্যাটাসের পর বদরগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তাল হয়ে ওঠে।
গত শনিবার শহীদুল হক মানিকপন্থীরা পৌরশহরের বাচ্চা মিয়ার গলির আলম মার্কেট এলাকায় বিএনপি কর্মী লাভলুসহ আরো পাঁচজনকে কুপিয়ে আহত করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় লাভলু রংপুর মেডিক্যালে নেওয়া হলে বিকেল সাড়ে ৫টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।