মৌলভীবাজারে তরুণ আইনজীবী সুজন মিয়া খুনের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খুনের ঘটনার চাঞ্চল্যকর রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ৫ খুনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ (১০ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভা কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এমন তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার এম, কে, এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ৫ আসামীরা হলেন, সদর উপজেলার বাসুদেবশ্রী এলাকার বাসিন্দা মূল পরিকল্পনাকারী নজির মিয়া ওরফে মুজিব (২৫), রঘুনন্ধনপুর এলাকার বাসিন্দা মো. আরিফ মিয়া (২৭), দিশালোক এলাকার হোসাইন আহমদ সোহান (১৯), রাজনগর উপজেলার মাথিউরা চা বাগানের লক্ষণ নাইডু (২৩) ও নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার বাসিন্দা আব্দুর রহিম (১৯)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, বিভিন্ন তথ্য উপাথ্যর ভিত্তিতে খুনের পেছনের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ সক্ষম হয়েছে। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী নজির মিয়া ওরফে মুজিব তার পাশের বাড়ির ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত মিসবাহের সঙ্গে পূর্বশত্রুতা ছিল। সেই শত্রæতার প্রতিশোধ নিতে ভাড়াটিয়া খুনি নিয়োগ করে মুজিব। মুজিবের পূর্বপরিচিত লক্ষণের মাধ্যমে এসব খুনির সঙ্গে যোগাযোগ হয় এবং মুজিব মোবাইল ফোনে মিসবাহের ছবি পাঠায়।
৬ এপ্রিল রাত ১০ টা ৫০ মিনিটের সময় আইনজীবী সুজন মিয়াকে মিসবাহ ভেবে ভুল করে তাকে ভিডিও কলে দেখিয়ে নিশ্চিত করে খুনিরা। এ সময় মুজিব ফোনে নির্দেশ দেন ছবির সঙ্গে সুজনের মিল আছে। এরপরই চেয়ারে বসা অবস্থায় সুজন মিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ১০ থেকে ১২ জন দুষ্কৃতিকারী। পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার সমস্ত তথ্য প্রমান পুলিশের কাছে রয়েছে এবং মিসবাহ এর সাথে যে মুজিব এর বিরোধ আছে তার তথ্যও আমরা সংগ্রহ করেছি। এছাড়াও এঘটনার পিছনে আর কোন তথ্য আছে কী না তা পুরো নেটওয়ার্ক ধরার পর বলা যাবে।
এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় নিহতের ভাই এনামুল হক সুমন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল বুধবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, সদর মডেল থানার ওসি গাজী মো. মাহবুবুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি জাফর হোসেন সহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয় ৫ আসামীকে। এর পর তাদের কড়া নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় আদালতে।
এদিকে সুজন খুনের ঘটনায় একই দিন দুপুর ২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি।