কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে ৪মাস ১১দিন পর আজ শনিবার সকাল ৭টার দিকে পাগলা মসজিদের ১১টি দানসিন্দুক খুলে পাওয়া গেছে ২৮বস্তা টাকা, বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা, চলছে গণনার কাজ। জেলা শহরের নরসুন্দা নদীরতীরে ঐতিহাসিক এ মসজিদে লোহার দানসিন্দুকগুলো তিন থেকে চার মাস পরপর খোলা হয়।
পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণত তিন থেকে চার মাস পরপর দানসিন্ধুক খোলা হয়। প্রথমে টাকাগুলো লোহার সিন্দুক থেকে বস্তায় ভরা হয়। পরে মসজিদের মেঝেতে ঢেলে গণনার কাজ শুরু করা হয়। কিশোরগঞ্জের আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া ও পাগলা মসজিদের এতিমখানার ২৮৭ জন শিক্ষার্থী, ব্যাংকের ৮০ কর্মকর্তা-কর্মচারী, মাদ্রাসার ৪৫ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ ৪০১ জন টাকা গণনার কাজ করছেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর নেতৃত্বে সকাল ৭টায় ১১টি দানসিন্দুক খোলা হয়।
দানসিন্দুক খোলার সময় কিশোরগঞ্জ সেনাক্যাম্পের ক্যাপ্টেন মো. মোস্তাফিজুর সহ অন্য সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া এ সময় এখানে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ মিয়াসহ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ আলী হারেছী এবং পাগলা মসজিদের খতিব মাওলানা আশরাফ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তাও করা হয়ে থাকে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, সকাল থেকে টাকার সিন্দুক খোলা, বস্তায় ভরে এনে গণনা শেষে ব্যাংকে সব টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন। গণনার দিন ছাড়াও বাকি দিনগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন সিন্দুকের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেন।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটি স্থাপিত। কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে দান করে থাকেন। মানুষ টাকাপয়সা ছাড়াও স্বর্ণালংকার দান করেন। গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদটিতে দান করা হয়।