সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় চলতি ২০২৪-২৫ ইরি বোরো মৌসুমে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পৌছার পাশাপাশি কৃষকদের মধ্য বাড়ছে শঙ্কা। চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে বোরো মৌসুমের বাম্পার ফলন হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্য ধান কেটে ফেলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে উপজেলার প্রান্তিক এলাকার কৃষকেরা। বিশেষ করে গত দুইদিনের মেঘালয়ের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ইতিমধ্যে উপজেলা প্রধান নদী সারী সহ বড়গাঙ, রাংপানি নদী ও শাখা প্রশাখাগুলো ঢলের পানিতে ভরে গেছে।
এদিকে আগামী এক সপ্তাহ উজানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় কৃষকদের মধ্যে অবশিষ্ট ধানগুলো কেটে তুলা নিয়ে শঙ্কা বিরাজ করছে। এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মোতাবেক ইতিমধ্যে উপজেলায় হাওর এলাকায় ৬৫% জমির ধান কর্তন শেষ হয়েছে। এ ছাড়াও সাধারণ জমিতে মাত্র ১০% জমির ধান কর্তন সম্পন্ন করা হয়েছে। এর প্রধান কারণ এখনো বেশ কয়েক হেক্টর জমির ধান পরিপূর্ণ পাকে নি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়, চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ৫ হাজার ৬ শত ৬০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে।
এর মধ্যে নিজপাট ইউনিয়নে ৬৪১ হেক্টর, জৈন্তাপুর ইউনিয়নে ১১০৭ হেক্টর, চারিকাঠা ইউনিয়নে ৪৫৩ হেক্টর, দরবস্ত ইউনিয়নে ১১৫২ হেক্টর, ফতেহপুর ইউনিয়নে ১২৬২ হেক্টর ও চিকনাগোল ইউনিয়নে ১১৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে।
চলতি মৌসুমে হাইব্রিড, উফশী ও স্হানীয় জাতের এই তিন প্রজাতির ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ১২৬০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, ৪২২০ হেক্টর জমিতে উফশী ও ১৮০ জমিতে স্হানীয় প্রজাতির ধান চাষ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়, হাইব্রিড প্রজাতির মধ্যে এসএলএইচ, হীরা,রুপালী,টিয়া,ময়না প্রজাতির চাষ হয়েছে। এছাড়াও উফশী প্রজাতির মধ্যে ব্রি ধান ২৮,২৯,৫০,৫১,৬৪,৭৪,৮৪,৮৯,৯২,১০০,১০২,বিনাধান -২৫ ও স্হানীয় জাতের খৈয়া, টেপি ও আয়নামিয়া অন্যতম। চলতি বছর বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২১ হাজার ৬ শত ২১ মেট্রিকটন নির্ধারণ করা হয়েছে যা ফলন অনুযায়ী অর্জনের পথে।
এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন,চলতি মৌসুমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জৈন্তাপুরের বাস্তবায়নে ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট (ফ্রিপ) প্রকল্পের আওতায় উজেলার কৃষক পর্যায়ে সিড ভিলেজ বোরো ধানের প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন বিগত দুই দিনের ভারী বর্ষণ উপজেলার নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও এখনোও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয় নি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস সার্বক্ষণিকভাবে বিষয়টি মনিটরিং করছে। ইতিমধ্যে গত কিছুদিন পূর্বে আনুষ্ঠানিক ভাবে শশ্যকর্তন কার্যক্রম শুরু করা হয়। আগামী দুই সপ্তাহ আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে হাওড়াঞ্চলের ধান শতভাগ কর্তন করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে থেকে সার্বিক দিকনির্দেশনা ও মনিটরিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।