ছবিঃ সংগৃহীত।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট এবং প্রশাসনিক স্থবিরতায় ভুগছে। বিশ্ববিদ্যালয় আইন লঙ্ঘন করে অধ্যাপক ড. লাইসা আহমদ লিসা টানা ৮ বছর ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন—যা ২০০৫ সালের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫-এর ২৪(২) ধারায় বলা হয়েছে, বিভাগীয় অধ্যাপকদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে তিন বছরের জন্য ভাইস-চ্যান্সেলর চেয়ারম্যান নিযুক্ত করবেন।” তবে একই ব্যক্তির দীর্ঘদিন দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও কার্যকারিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভাগে নেই নির্ধারিত ক্লাস রুটিন কিংবা একাডেমিক গাইডলাইন। যার ফলে সেশনজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। অন্যান্য বিভাগে যেখানে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে স্নাতকোত্তর শেষ পর্যায়ে, সেখানে এই বিভাগের একই সেশনের শিক্ষার্থীরা এখনও স্নাতক সম্পন্ন করতে পারেনি। এমনকি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর কার্যক্রম এখনও চলমান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, বিভাগটির সবচেয়ে বড় সমস্যা নেতৃত্বের অদক্ষতা। আমাদের চেয়ারম্যান একদিকে বিভাগের দায়িত্বে, অন্যদিকে ছায়ানটসহ নানা সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যানের পক্ষপাতমূলক মনোভাব ও সময় স্বল্পতার কারণে বিভাগীয় সংকটগুলো দিনদিন বাড়ছে।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে চালু হওয়া বিভাগটিতে বর্তমানে ৬টি ব্যাচে পড়ছেন প্রায় ১৭০ জন শিক্ষার্থী। সেখানে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৯ জন—এর মধ্যে ৩ জন বর্তমানে শিক্ষা ছুটিতে। কার্যত ৬ জন শিক্ষককে এই বিশাল শিক্ষার্থীসংখ্যার পাঠদান পরিচালনা করতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষকরা প্রায়ই শিক্ষা ছুটিতে থাকেন, যার ফলে পাঠদানের মান ও ধারাবাহিকতা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত একাডেমিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. লাইসা আহমদ লিসা বলেন, আপনি আমাদের বিভাগের অফিসে কথা বলুন। সেখান থেকে সব জানতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমরা সমস্যাটি সম্পর্কে অবগত। শিক্ষক সংকট রয়েছে, তবে চাইলেই তো নিয়োগ দেওয়া যায় না। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। অনুমোদন পেলেই আমরা দ্রুত নিয়োগ দেব।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. লাইসা আহমদ লিসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের সহ-সভাপতি। পাশাপাশি তিনি একজন খ্যাতিমান রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী। ছায়ানটের সেক্রেটারি, আনন্দধ্বনীর সদস্য এবং জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড (২০০৭) এবং বাংলা একাডেমির 'রবীন্দ্র পুরস্কার' (২০২৪) লাভ করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh