× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বান্দরবানে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণ প্রকল্পের নয়ছয় অভিযোগ

আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান।

৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:৫৫ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

বান্দরবানে রোয়াংছড়িতে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণ (টি আর) কর্মসূচির অধীন বাস্তবায়িত প্রকল্প নিয়ে চলছে নয়ছয়। সমিতির নামে আসবাবপত্র বিতরণের নামে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে নোয়াপতং ইউনিয়নের ১,২,৩ ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মেনুপ্রু মারমা বিরুদ্ধে। সংগঠনের চাহিদানুযায়ী প্রকল্পের বরাদ্ধ এসেও নয়ছয় করে বাকি অর্থের আত্মসাত করার অভিযোগ আছে এই সংরক্ষিত ইউপি সদস্য বিরুদ্ধে।

প্রতি অর্থ-বছরে টিআর ও কাবিটা সংস্কার কর্মসূচির অধীন গ্রামীণ পর্যায়ে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে জেলার ৭ উপজেলায় বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয় সরকার। এসব বরাদ্দে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়। কাজের তদারকি করেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা। কিন্তু তদারককারী ও বাস্তবায়নকারীদের মধ্যে ভাগাভাগির কারণে সিংহভাগ অর্থ চলে যায় তাদের পকেটে। ফলে শেষমেশ কাজ হয় নামে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রোয়াংছড়ি উপজেলা নোয়াপতং ইউনিয়নের গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণ (টি আর) কর্মসূচির অধীনে অর্থ বরাদ্ধ পেয়েছিলেন মহিলা মেম্বার। যার অর্থের পরিমান ১ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা। কিন্তু সমিটিতে আসবাবপত্র ক্রয় করে দিয়েছে মাত্র ৪০ হাজার টাকার অধিক। শুধু এটি নয় গেল অর্থ বছরে বৌদ্ধ বিহারে সংস্কারে সময় নানা অনিয়ম অভিযোগ রয়েছে মহিলা মেম্বার বিরুদ্ধে।

গেল বছর ১৩সেপ্টেম্বর মাসে অন্তহা পাড়া ফোরামে ঘরের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র পেতে নোয়াপতং চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন অন্তহা পাড়া মহিলা ফোরাম। চলতি বছরে আসবাবপত্র বিতরণের জন্য গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণ (টি আর) কর্মসূচী মাধ্যমে বরাদ্ধ দেয়া হয়। প্রকল্পের সভাপতি দেয়া হয় ১,২,৩ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মেনুপ্রু মারমাকে। কিন্তু গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণ (টি আর) কর্মসূচী দেয়ার পর মিলেছে অনিয়মের চিত্র। অন্তহা পাড়া ফোরামে ঘরের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র পুরোপুরি না দিয়ে নয়ছয় করে ফেলেন প্রকল্পের সভাপতি। শুধু এটি নয় অন্তপাড়া বিহারে দুটি শৌচাগার নির্মাণেও একই দুর্নীতির চিত্র। এ যেন কেচোঁ খুড়তে বেড়িয়ে এসেছে সাপ!

সরেজমিনে দেখা গেছে, টিন শেডের তৈরী অন্তহা পাড়া ফোরামের ঘর।  মুলত সেখানে ত্রিপুরাদের ধর্মীয় উপসানালয় চার্চ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সে চার্চে ভিতরে ২০টি চেয়ার, ১টি টেবিল, একটি এলুমিনিয়ামের আলমারী, একটি ফ্লাক্স ও এক ডজন চায়ের কাপসহ আসবাবপত্র হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। সেগুলো সবমিলে খরচ আসে ৪০ হাজার অধিক। কিন্তু সংগঠনের চাহিদানুসারে যে অর্থ বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে তাতেই শতভাগ দেয়ার দূরে কথা মাত্র পেয়েছে ২০ শতাংশের মতন। বাকি অর্থ নয়ছয় করে আত্মসাত করে ফেলেছেন ইউপি মহিলা সদস্য। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে এলাকাবাসীসহ সমিটির সদস্যরা।

অন্তহা পাড়া গ্রামে গ্রামপ্রধান(কারবারি) শান্তিলাল ত্রিপুরা বলেন, সংগঠনের জন্য প্রয়োজনীয়  আসবাবপত্র চাহিদা অনুসারে আবেদন করা হয়েছিল। বরাদ্ধ আসলেও কিছু টাকার আসবাবপত্র কিনে দিয়েছেন। বাকি টাকাগুলোকে মহিলা মেম্বার নয়ছয় করে ফেলেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

অন্তহা পাড়া মহিলা ফোরাম সভাপতি শ্রীমতি ত্রিপুরা বলেন, আমরা সমিতির আসবাবপত্রে জন্য চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছি। কিন্তু দেয়ার সময় ৪০ হাজার টাকাও জিনিস পত্র কিনে দেননি মহিলা মেম্বার। আর সমিতি সদস্যদের অজান্তে দুই একজন এলাকার ছেলেদেরকে দিয়ে ছবি তুলে নিয়ে গেছে।

নোয়াপতং ইউনিয়নের ১,২,৩ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মেনুপ্রু মারমা বলেন, আমি আবার পরে কিনে দিব আর কি। এখন পাহাড়ে আদা লাগাচ্ছি। আর সময় পেলে আপনার সাথে দেখা করব ত। বেশী প্রশ্ন করেন কেন!

নোয়াপতং ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান চনুমং মারমা বলেন, উপজেলা থেকে যেসব প্রকল্প এসেছে সবগুলো ইউপি সদস্যদের ভাগ করে দেয়া হয়েছে। যারা কাজ করবে না তাদেরকে গিয়ে ধরেন। এসব বিষয়ে আমার কোন সমস্যা নাই। 

প্রতিটি প্রকল্প থেকে ১০ শতাংশ ভাগ কেন নিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে চেয়ারম্যান রাগান্বিত হয়ে গলা উচ্চস্বরে বলেন,কে বলেছে এই কথা' পারলে প্রমাণ দেখান বলে ফোনটি কেটে দেন।

রোয়াংছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা  মিল্টন দস্তিদার বলেন, অন্তহা পাড়া মহিলা সমিতিদের আসবাবপত্র বিতরণের বিষয়ে পরিদর্শন করে অনিয়মের চিত্র পেয়েছি। আর আপনারা যেহেতু পরিদর্শন করেছেন তাই সমিতিদের চাহিদা অনুযায়ী আসবাবপত্র না দেয়ার পর্যন্ত মহিলা মেম্বারকে বিল দেয়া হবে না।

এবিষয়ে রোয়াংছড়ি নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা পরিদর্শন করে প্রকল্পটি নিয়ে এসেছি। কোন ইউপি সদস্য যদি প্রকল্পের কাজে কোন অনিয়ম করে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া পাশাপাশি বিল বন্ধ করে কাজটি বুঝিয়ে নেয়া হবে।

তিনি বলেন,  আমরা যেহেতু দুর্গম এলাকার সব কাজগুলো পরিদর্শন করার সম্ভব নয়, তাই আপনারা যদি পরিদর্শন করে অনিয়ম পেয়ে থাকেন তাহলে অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.