বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে গত বছরের অক্টোবরে দুই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় তালিকাভুক্ত খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল)।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে গত বছরের অক্টোবরে দুই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় তালিকাভুক্ত খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল)। এর পর থেকেই বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ কোম্পানিটির আয় বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি চলতি ২০২৪-২৫ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে খুলনা পাওয়ার। এতে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এক টাকাও আয় করতে পারেনি কোম্পানিটি, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ১৩ কোটি টাকা আয় হয়েছিল।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২৪-২৫ হিসাব বছরে তৃতীয় প্রান্তিকে ২ কোটি ৪ লাখ টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে খুলনা পাওয়ারের, যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা নিট লোকসান হয়েছিল। মূলত সহযোগী কোম্পানি থেকে বাড়তি মুনাফা পাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ব্যয় কমার ফলে কোনো ধরনের আয় না থাকা সত্ত্বেও নিট মুনাফা করতে পেরেছে কোম্পানিটি। চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৫ পয়সা, যেখানে আগের হিসাব বছরে একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছিল ১০ পয়সা।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) খুলনা পাওয়ারের ৮২ কোটি টাকা আয় হয়েছে, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৩২ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটি ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা নিট মুনাফা করেছে, যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা নিট লোকসান হয়েছিল। চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১৩ পয়সা, যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ৬ পয়সা লোকসান হয়েছিল।
গত বছরের ২৮ অক্টোবর স্টক এক্সচেঞ্জকে খুলনা পাওয়ার জানায়, বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনার পর ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে গ্যারান্টিযুক্ত অফটেক ছাড়াই ‘নো ইলেকট্রিসি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে কোম্পানিটির খুলনার ১১৫ মেগাওয়াট কেপিসি ইউনিট-২ ও যশোরের নোয়াপাড়া ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটি চালু ছিল। তবে কেন্দ্র দুটির বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) কার্যকর হয়নি। তাছাড়া বিপিডিবির সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্র দুটি থেকে বিদ্যুৎ কেনার জন্য চাহিদাও দেয়নি। এ অবস্থায় পিপিএ বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানায় খুলনা পাওয়ার।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরে খুলনা পাওয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৫ পয়সা। আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৬৭ পয়সা লোকসান হয়েছিল। গত বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৮ টাকা ৩৪ পয়সা।
২০২২-২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে কেপিসিএলের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৬৭ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৩ পয়সা। ৩০ জুন ২০২২ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ১৯ পয়সায়।
১৯৯৭ সালে দেশের প্রথম আইপিপি হিসেবে কেপিসিএলের যাত্রা শুরু। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০১০ সালে। বর্তমানে কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৭০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৩৯৭ কোটি ৪১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৩৩১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৩৯ কোটি ৭৪ লাখ ১৩ হাজার ১৭৯। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকের কাছে ৬৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ৮ দশমিক ৯২, বিদেশী দশমিক শূন্য ৬ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ২১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ শেয়ার।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সর্বশেষ খুলনা পাওয়ারের শেয়ার ১২ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৯ টাকা থেকে ২৬ টাকা ৬০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh