প্রতীকী ছবি
তিন দিন পেরিয়ে গেলেও প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় আগৈলঝাড়া থানার ওসির মেয়েকে মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। একই সাথে ভুক্তভোগীর মায়ের দায়ের করা লিখিত সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ধারা বাদ দিয়ে দায়সারাভাবে মামলা রেকর্ড করারও অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট থানার ওসির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানার ওসির পুলিশের দায়সারা আচরণে ভুক্তভোগীর বাবা ও মামলার বাদী আগৈলঝাড়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে হামলার শিকার শিক্ষার্থীর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষর অফিসে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি, এসি ও মিডিয়া কর্মীদের উপস্থিতিতে এজাহারভুক্ত ১ এবং ২ নং আসামি ফাতিমা খাতুন চম্পা ও তার মেয়ে সাকিন নাহার শশীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার আহ্বান জানানো হলেও অজ্ঞাত কারণে কোতোয়ালী থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ করেছেন আগৈলঝাড়া থানা অফিসার ইন চার্জ মো. গোলাম ছরোয়ার।
আগৈলঝাড়া থানা অফিসার ইন চার্জ মো. গোলাম ছরোয়ার বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযোগে বলেন, তার মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী আবিরা ছরোয়ার শেফাকে মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুবা হোসেনের কাছে অভিযোগ করলে প্রধান শিক্ষক অভিযুক্তদের তাঁর অফিসে তলব করেন। ওই সময়ে ওসি গোলাম ছরোয়ার বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার এসি, ওসি, ওসি (তদন্ত) ও মিডিয়াকর্মীসহ অন্যান্যদের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত ফাতিমা খাতুন চম্পা ও তার মেয়ে সাকিন নাহার শশীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন এরা দু’জন তার স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগে অভিযুক্ত। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ওই পুলিশ কর্মকর্তারা অভিযুক্তদের পুলিশ হেফাজতে নিচ্ছেন না। এর ফলে অভিযুক্তরা কৌশলে পালিয়ে যেতে পারেন বলে ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় জানিয়েছে। তবুও সংশ্লিষ্ট থানার ওসির কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন- নগরীর বগুড়া রোডের বাসিন্দা ফাতেমা খাতুন চম্পা ও তার মেয়ে সাবিকুন নাহার শশী এবং নগরীর মতাসার এলাকার তাওসিফ মাহমুদ স্বাধীন ও আসাদ ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা ৪ জনসহ মোট আট জন।
মারধর ও শ্লীলতাহানির শিকার ছাত্রী আবিরা সরোয়ার শেফা আগৈলঝাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মো. সরোয়ারের মেয়ে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরীর মতাসার এলাকার বখাটে তাওসিফ মাহমুদ স্বাধীন সম্প্রতি কাউনিয়া থানায় মাদকসহ এপিবিএন সদস্যদের হাতে গ্রেপ্তার হন। বখাটে স্বাধীন ও তার সঙ্গীরা স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। অভিযুক্তদের আত্মীয় স্বজন প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশও তাদের গ্রেপ্তার করছে না।
আগৈলঝাড়া থানা অফিসার ইন চার্জ মো. গোলাম সরোয়ার চাকুরির সুবাদে আগৈলঝাড়ায় একা বসবাস করেন। লেখাপড়ার কারণে তাঁর স্ত্রী মৌসুমী ছেলেমেয়ে নিয়ে বরিশাল নগরীর কাজীপাড়া লুৎফর রহমান সড়কের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
আগৈলঝাড়া থানার ওসির অভিযোগের বিষয়ে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, অভিযোগে যে ধারা কাভার করে সেই ধারায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনাটি অনেক আগের তাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে অভিযুক্তদের অবশ্যই গ্রেপ্তার করা হবে। তবে অভিযুক্তদের ২৯ মার্চ হাতে পেয়েও পুলিশ হেফাজতে নেয়ার বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।
© 2023 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh