কিশোরগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে সংগঠনের ৩৩৩ জনের কমিটির ৫৬ জন নেতাকর্মী একযোগে পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার ( ৮ মে ) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রায়ান জোহান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলার ছাত্র রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা যায়, জেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মিয়া ও সংগঠক উল্লাস কে সংগঠনের আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন ও সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্স স্বাক্ষরিত একটি বহিষ্কারাদেশ জারি করে। তাদের বিরুদ্ধে 'সাংগঠনিক নীতি ও আদর্শবিরোধী কার্যক্রম' এর অভিযোগ আনা হয়।
এই বহিষ্কার আদেশের প্রতিবাদে সংগঠনের ৮ জন যুগ্ম আহ্বায়ক, ৮ জন যুগ্ম সদস্য সচিব, ৪ জন সংগঠক, স্বাস্থ্য সেলের ৩ জন এবং ৩৩ জন সাধারণ সদস্য পদত্যাগ করেন। তাদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বর্তমান নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রায়ান জোহান বলেন, গত ফেব্রুয়ারী মাসে আমাদের কিশোরগঞ্জ জেলার বৈষম্যবিরোধী কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে কমিটি গঠনের পর থেকেই জেলা কমিটির দায়িত্বশীলদের মাঝে দায়িত্বহীনতা থেকে শুরু করে নানান অন্যায় ও দুর্নীতির অভিযোগ স্পষ্ট হয়ে উঠে। যে বা যারাই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তাকেই বহিষ্কার করা হয়। গত ৩ তারিখ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অন্যায় এবং মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন ভাই এবং সংগঠক উল্লাস ভাইকে বহিষ্কার করা হয়। যা স্পষ্টভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নৈতিকতা বিরোধী। এসব কর্মকাণ্ড আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের একক আধিপত্য এবং স্বৈরাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। তারই পরিপেক্ষিতে এই অন্যায় দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে জেলা কমিটির অন্তত প্রায় ৫৬ জন পদত্যাগ করে।
অপরদিকে সংগঠনের আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন ও সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্স বলেন, জেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মিয়া জুলাই আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রদের উপর যারা হামলা করেছিল তাদের সাথে লিয়াজো করে মামুনের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা না বলে একটি মামলা করেছে। সে মামলাতে যারা ছাত্রদের উপর হামলা করেছিল তাদের আসামি না করে ব্যক্তিগত আক্রোশে ব্যবসায়ী, মসজিদের ইমাম ও সাধারণ মানুষকে আসামি করা হয়। যার অডিও-ভিডিও প্রমাণও আছে। এই অভিযোগ গুরুতর। তাই তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের যে সংখ্যা বলা হচ্ছে, তা অতিরঞ্জিত এবং বিভ্রান্তিকর। কারণ পদত্যাগ করেছে ৮ থেকে ১০ জন। আর যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে তাদের অনেকেই আমাদের কমিটি বাইরের লোক।