চট্টগ্রামে পাসপোর্ট অফিস দূর্নীতির আখড়াই পরিণত হয়েছে। সিন্ডিকেট করে সেবা নিতে আসা নাগরিককে হয়রানি করছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। তাদের সিন্ডিকেটের সিগন্যাল না মিললে জমা নেওয়া হয় না কোনো পাসপোর্ট আবেদন। আর এ চক্রের মূল হোতা হিসেবে রয়েছে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পাসপোর্ট করতে সরকারি খরচের বাইরে অতিরিক্ত আদায় করছে ইকবাল সিন্ডিকেট।
জানা যায়, পাসপোর্ট ফরম আবেদন ও নবায়নে সরকার নির্ধারিত ফি ৫৭৫০ টাকা। এ ফি'র বাইরে অতিরিক্ত কোন টাকা লাগে না। নির্ধারিত এ ফি জমা দিয়ে আবেদনকারী নিজের পাসপোর্ট নিজে জমা দিতে পারে। কিন্তু নগরীর চান্দগাঁও পাসপোর্ট অফিসের চিত্র ভিন্ন। সরকার নির্ধারিত ফি'র বাইরে অতিরিক্ত ১৬৫০ টাকা অতিরিক্ত টাকা দিয়ে নির্দিষ্ট দালাল চক্রের মাধ্যমে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হবে। এ দালাল চক্রের মূল হোতা হিসেবে কাজ করছেন পাসপোর্ট অফিসের ইকবাল হোসেন। আর দালাল হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছে খোকন, মোজাম্মেল, রুহুল আমিন ও নুরুল আলম। তারা সবাই পাসপোর্ট অফিসে এক সময় আনসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু দূর্নীতির দায়ে তাদের বরখাস্ত করার পর তারা দালাল চক্রের সাথে যুক্ত হয়ে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগ রয়েছে, এই দালাল চক্রের বাইরে গিয়ে কেউ যদি পাসপোর্ট আবেদন করে তাহলে নানা অজুহাতে তা গ্রহন করেন না ইকবাল হোসেন। কারণ পাসপোর্ট অফিসে আবেদন গ্রহন করে ইকবাল নিজে। তার চক্রের নির্ধারিত সাংকেতিক চিহ্ন যেটা তাদের ভাষায় "মার্কার" সেটা না থাকলে আবেদন ফরমে নানা অসঙ্গতিপূর্ণ দাবি করে ফেরত দেওয়া হয়। পরে ভুক্তভোগী যখন তার চক্রের মাধ্যমে তথাকথিত অসঙ্গতিপূর্ণ ফরমটি আনেন তখন তা গ্রহন করে।
ভুক্তভোগীরা জানান, ইকবাল হোসেনের চক্রের কাছে আমরা অসহায়। তার চক্রের মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন না করলে তাদের হয়রানির শেষ নেই। পাসপোর্ট অফিসে নতুন উপপরিচালক শরিফুল ইসলাম যোগদান করার পর থেকে তার কাছে গেলে নাকি সমস্যা সমাধান করেন। কিন্তু যারা গ্রামাঞ্চল থেকে আসে, তারা তো ও-ই স্যারের কাছে যেতে পারেন না। তাদের কি হবে, তাদের হয়রানি থেকে মুক্ত করতে ইকবালের অপসারণ করা দরকার। তাহলে পাসপোর্ট অফিসের দূর্নীতি বন্ধ হবে এবং নাগরিক সেবাও পাবে।
অভিযোগের বিষয়ে চক্রের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ভাই, এ বিষয়ে অফিসে বসে সামনাসামনি কথা বলি। আমার সামনে অনেক মানুষ।
মোবাইলে বলা সম্ভব নয় কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “না, অফিসে এসে জানতে হবে।”
এই ঘটনায় পাসপোর্ট সেবার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।