× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

কতৃপক্ষের উদাসিনতায় বিদ্যুৎপৃষ্ঠে ১বছরে ৭টি লজ্জাবতি বানরের মৃত্যু!

খোর্শেদ আলম,জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি।

১৪ মে ২০২৫, ১৯:৫২ পিএম

ছবিঃ সংবাদ সারাবেলা।

মৌলভীবাজেরের জুড়ী রেঞ্জের লাঠিটিলা  ও বড়লেখা রেঞ্জের মাধবকুন্ড ইকোপার্কে বিদ্যুৎপৃষ্ঠে গত ১বছরে ৭টি বিপন্ন প্রজাতির লজ্জাবতি বানর ও ৩টি চশমরাপরা হনুমানের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

১২ মে (সোমবার) মাধবকুণ্ড ইকোপার্কের মূল ফটকের পাশে একটি প্রাপ্তবয়স্ক  বানরের মৃত্যু সহ গত ৩১/০৩/২০২৫ ও ২৬/০৪/২০২৫ ইং তারিখে আরও ২টি বানের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদিকে লাঠিটিলা বন বিট এলাকায় এবছর আরও ৩টি ও বিনন্দপুর ১টি সহ মোট ৭টি লজ্জাবতি বানর ও লাঠিটিলা বনে আরও ৩টি চশমরাপরা মৃত্যু হয়েছে। 

বন বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মাধবকুন্ড ইকোপার্কের মূল ফটক সংলগ্ন প্রায় ০.৫ কি:মি: রাস্তার দুই পাশে লজ্জাবতী বানরের গুরুপুর্ণ আবাস্থল। সেখানে রাস্তার পাশ দিয়ে বিদ্যুতের যে খোলা তার গিয়েছে তাতে মাঝে মধ্যেই বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মারা যাচ্ছে লজ্জাবতী বানর। 

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবেশবাদী সেচ্ছাসেবী সংগঠন "পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিম" ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসব সংরক্ষিত বন এলাকায় ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন বিপন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী মারাগেছে। এ নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের পক্ষ থেকে চিটির মাধ্যমে সংরক্ষিত বন এলাকায় ইনসুলেটেড (প্রলেপযুক্ত) তারের ব্যবস্থার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর দায় এড়াতে অল্প কিছু যায়গায় প্লাস্টিক মোড়ানো তার দিয়ে লাইন গুলো কাভার করেছে। তবে বনের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ঝুকিপূর্ণ স্থানে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে শীঘ্রই লাঠিটিলা ও মাধবকুন্ড বনে বন্যপ্রাণী শূণ্য হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। পাশাপাশি জীব বৈচিত্র্য রয়েছে মারাত্মক হুমকির মুখে।

পরিবেশকর্মি আবিদ হুসাইন বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে চশমাপরা হনুমান মারা যাওয়ার খবর বরাবরই পাই, এমন ঘটনায় সম্প্রতি জুড়ী - বড়লেখা মিলে বেশ কয়েকটি চশমাপরা হনুমানও মারা গেছে। ২০২৩ সালে বন বিভাগ পল্লী বিদ্যুৎ এর বড়লেখা জোনাল অফিসে আবেদন করেছিল বনের ভিতরের তারগুলো ইনসুলেটেড করার জন্য, কিন্তু নানা অজুহাতে তা বাস্তবায়ন করছে না বিদ্যুৎ অফিস। এভাবে যদি প্রতিনিয়ত হনুমানগুলো মারা যায়, তবে প্রাণীটি বিলুপ্তির পথে চলে যাবে। আমি মনে করি যত দ্রুত সম্ভব এদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

লজ্জাবতী বানর গবেষণা ও সংরক্ষণ প্রকল্পের মুখ্য গবেষক সাবিত হাসান বলেন, লজ্জাবতি বানর হুমকির মূখে পড়ার অন্যতম কারণ হলো, নির্বিচারে বন উজাড়, পাচার, ঔষধ হিসাবে ব্যবহার, খাবারের উদ্দেশ্যে হত্যা ও বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মারা যাওয়া লজ্জাবতী বানরের প্রধান হুমকী। এছাড়াও রাস্তার দুপাশের গাছের মধ্যকার ডাল (ক্যানোপী) কেটে  সংযোগ নষ্ট হওয়ায় বাড়ছে রাস্তায় বানরের দুর্ঘটনার ঝুঁকি। এসব ঝুঁকি থেকে লজ্জাবতী বানর সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের রক্ষা করতে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বনের মধ্যেকার বিদ্যুতের তার কে রাবার বা অন্যান্য বিদ্যুৎ অপরিবাহী কিছু দিয়ে মুড়িয়ে দিতে হবে। একই সাথে রাস্তার দুই ধারের গাছের সংযোগ রক্ষা করতে হবে । বন সংরক্ষণে গাছ রোপণে লজ্জাবতী বানরের জন্য গাম বা আঠা উৎপাদনকারী গাছকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বন্যপ্রাণী প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল সদর দপ্তর (মৌলভীবাজার) ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গতকালকে লজ্জাবতী বানরটি মারা যাওয়ার বিষয়টি স্থানীয় বন বিভাগের কেউ জানে না। তবে ইতিমধ্যে আমি একাধিকবার পল্লী বিদ্যুৎ কে আমি চিঠি দিয়েছি লাইন গুলো কাভার করার জন্য। পর্যায় ক্রমে তারা খোলা তার গুলো ইনসুলেট করার কথা বলেছে। আমি এই বিষয়গুলো আবার তাদেরকে জানাবো যেন দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। আর কোন বন্যপ্রাণীর মৃত্যু দেখতে চাই না।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.