মঙ্গলবার দুপুরে বৈদারাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) কর্তৃক একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পলিথিন বর্জন এবং বিকল্প ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ শীর্ষক সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান ও সেমিনার বৈদারাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা নেটওয়ার্ক (বেলা) মেম্বার মুঃ আল আমীন বাকলাই সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝালকাঠি জেলা জজ কোর্টের (এজিপি) সাকিনা আলম লিজা, অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ঝালকাঠি বৈদারাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফকরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেলা'র বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন। বৈদারাপুর স্কুলের শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক অভিভাবক সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা বলেন প্লাস্টিক ও পলিথিন একটি নীরব ঘাতক। আমরা মাটি পানি বায়ু সর্বত্র একে ছড়িয়ে দিয়েছি এখন তারা মানবদেহে ঢুকে আমাদের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে মৃত্যুন দিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্লাস্টিক দূষণের প্রতিবছর প্রায় ১০ লক্ষ প্রাণী মৃত্যু বরণ করে। প্রতিদিন আমরা বায়ু থেকে অক্সিজেনের মাধ্যমে প্লাস্টিক কণা গ্রহণ করছি, পানি লবণ চিনি মাছ সহ নিত্য পণ্যে প্লাস্টিক কণা গ্রহণ করছি। এখনই সচেতন না হলে ২০৫০ সাল নাগাদ ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে। ছাত্র-ছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণমূলক আলোচনার মাধ্যমে একটি সুন্দর সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা কতৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতা করেন সাংবাদিক মোঃ উজ্জ্বল রহমানসহ স্কুলের শিক্ষিকবৃন্দরা।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার বৈদারাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোনিয়া আক্তার বলেন, আগে দেখত, লোকজন বাজার-সদাই করতে খাড়াই (বাঁশ-বেতের ঝুড়ি), কাপড়, চট দিয়ে তৈরি ব্যাগ নিয়ে বাজারে যেতেন। এখন খালি হাতে যান। ফিরে আসেন পলিথিন, প্লাস্টিকে ব্যাগ নিয়ে। এটা বন্ধ করতে হলে আগের অভ্যাসে ফিরে যেতে হবে। তাহলে পলিথিনের ব্যবহার ৫০ শতাংশ কমে যাবে।
বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী রুহুল আমিন বলেন, ‘পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য বর্জনের জন্য উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি বাজারে, পরিবারে মানুষের সামনে এর বিকল্প গুলো সহজলভ্য করতে হবে। পলিথিনের উৎপাদন বন্ধ করতে উদ্যোগ নিতে হবে। এর বিরুদ্ধে সামাজিক যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে লিঙ্কন বায়েন বলেন, ‘ব্যবহারের পর আমরা যে প্লাস্টিক-পলিথিন ফেলে দিই, তা মাটি ও পানিতে অপচনশীল অবস্থায় মিশে যায়। দীর্ঘ সময় পরিবেশে অবস্থানের ফলে প্লাস্টিক দ্রব্যাদি মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয় এবং সরাসরি প্রাণীর খাদ্যচক্রে প্রবেশ করে। ফলে মানবজাতি ও প্রাণিকুল নানা ধরনের প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
প্লাস্টিক-পলিথিনের দূষণ ও বিকল্প ব্যবহারুসম্পর্কিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বর্তমান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা আহসানের প্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিষ্ঠান যা দীর্ঘ দিন যাবৎ পরিবেশ নিয়ে কাজ করছে।