কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের মালেকের ঘোনা এলাকায় বসবাসরত রোহিঙ্গা আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে নিজের মামা-শ্বাশুড়িকে পিতা-মাতা দেখিয়ে ভূয়া জন্ম সনদ তৈরির অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ঐ সনদ ব্যবহার করে তার স্ত্রী জয়নাব বেগমসহ পরিবারের ৮ সন্তানেরও জন্ম সনদ তৈরি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আমান উল্লাহ প্রায় ৩০ বছর আগে অবৈধভাবে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং খুরুশকুলে ফিশিং বোটে জেলে হিসেবে কাজ করতেন। পরে তিনি স্থানীয় মোয়াজ্জেম হোসেনের মেয়ে জয়নাব বেগমকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে মালয়েশিয়া গিয়ে দীর্ঘদিন থাকার পর তিনি আবার বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
অনুসন্ধানে উঠে আসে, আমান উল্লাহ মালয়েশিয়ায় থাকার সময় তার স্ত্রী জয়নাব বেগম নিজের আপন মামা ইছাক মাঝি ও মামী জোহরা খাতুনের এনআইডি ব্যবহার করে তাদেরকে আমান উল্লাহর পিতা-মাতা হিসেবে দেখিয়ে খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম সনদ তৈরি করেন। পরবর্তীতে সেই ভূয়া জন্ম সনদ ব্যবহার করে পরিবারের বাকি সদস্যদের জন্ম সনদও সংগ্রহ করা হয়।
যদিও তারা খুরুশকুল ২নং ওয়ার্ডের মালেকের ঘোনায় বসবাস করেন, সকল সনদে ৮নং ওয়ার্ডের লামাজী পাড়া, ইছাকের বাড়ি উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে কথা বলতে আমান উল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি এরশাদের আমলে বাংলাদেশে এসেছি, এখানেই বিয়ে করেছি, সন্তান হয়েছে। আমি ইছাক মাঝির সাথে কাজ করতাম, তার বাড়িতেই থাকতাম। তাই তার নাম দিয়েছি।” তিনি আরও দাবি করেন, “এলাকার কিছু মানুষ শত্রুতা করছে, আর আপনারা যদি নিউজ না করেন, আমি আপনাদের খুশি করবো।”
অপরদিকে, মৃত ইছাক মাঝির ছেলে কলিম উল্লাহ বলেন, “আমরা আমান উল্লাহকে চিনি, কিন্তু আমার বাবা-মার এনআইডি দিয়ে জন্ম সনদ বানানোর বিষয়টি জানতাম না। আমি এসব ভূয়া সনদ বাতিলের অনুরোধ জানাই।”
খুরুশকুল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন বলেন, “বিষয়টি আপনার কাছে শুনলাম, জন্ম সনদের কপি দেখেছি। সাবেক চেয়ারম্যানের আমলে এসব করা হয়েছে। ইউএনও মহোদয়কে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসিন চৌধুরী বলেন, “এটি গুরুতর রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ইস্যু। দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সচেতন মহল ও নাগরিকরা এসব ভূয়া জন্ম সনদ দ্রুত বাতিল এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।