দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে গত তিনদিনের লাগাতার কালবৈশাখী ঝড়োবৃষ্টিতে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গত রোববার (১৮ মে) রাত ৮ টা থেকে ব্যাপক আকারে ঝড়োবৃষ্টি শুরু হয়ে মঙ্গলবার (২০ মে) পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ঝড়োবৃষ্টিতে বেশ কয়েকটি এলাকার ক্ষেতের পাকা ও আধাপাকা বোরো ধান গাছ জমে থাকা পানিতে শুয়ে পড়েছে। এতে ভুক্তভোগী কৃষকরা ক্ষেতের বোরো ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, ঝড়োবৃষ্টিতে যেসব জমিতে পাকা ও আধাপাকা ধান ছিল তা তা মাটিতে পড়ে গেছে। জমিতে পানি জমে থাকায় ধান গজিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। অনেক এলাকার কাটা ধানও মাঠে পড়ে বৃষ্টিতে ভিজে গেছে, যা শুকাতে না পারলে তা নষ্ট হয়ে যাবে।
উপজেলার ১নং এলুয়ারি ইউনিয়নের পানিকাটা গ্রামের কৃষক সোহরাব মন্ডল বলেন, তিনদিনের ঝড়োবৃষ্টিতে তার দুই বিঘা জমির ধান পানির নিচে শুয়ে পড়েছে। যদি দ্রæত ওই জমির ধান কাটতে না পারেন, তবে সেগুলো গজিয়ে যাবে। এতে তার অনেক ক্ষতি হবে। এজন্য চড়াদামে ক্ষেতমজুর নিয়ে ধান কাটার চেষ্টা করছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, উপজেলায় এবারে ১৪ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবাদও হয়েছে একই পরিমাণ জমিতে। ফলন ভালো হয়েছে। আবাদকৃত জমির ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৫ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন ধান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ মো. শাহানুর রহমান বলেন, বর্তমানে উপজেলায় ৭০ ভাগ জমির বোরো ধান কর্তন করা শেষ হয়েছে। তবে যে ৩০ ভাগ কর্তনের অপেক্ষায় রয়েছে সেগুলো বিআর-২৯ ও বিআর-৮৯ জাতের। তবে দু-এক স্থানে ধানের গাছ জমির পানিতে শুয়ে পড়ে থাকে তবে সেগুলো দু-একদিনের মধ্যেই কর্তন করে ফেলতে হবে। তাহালে তেমন ক্ষতি হবে না। আশা করা যাচ্ছে দ্রæতই জমির পানি নেমে যাবে। দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, চলমান মৌসুমি বৃষ্টিপাত আজ মঙ্গলবার (২০ মে) পর্যন্ত চলবে। ঘূর্ণিঝড়েরও আশঙ্কা রয়েছে। গত তিনদিনের মধ্যে মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬৩ মিলিমিটার, গত সোমবার (১৯ মে) ৪২ মিলিমিটার এবং গত রোববার (১৮ মে) ৫৮ মিলিমিটার।