ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ‘মালি’ পদে কর্মরত সোহেল মিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই মেডিকেল সার্টিফিকেট (এমসি) বাণিজ্যের অভিযোগ উঠছে। রোগীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে এমসি দেওয়ার এই অভিযোগে দীর্ঘদিনের । সম্প্রতি আখাউড়া পৌর এলাকার বাসিন্দা হেলাল মিয়া লিখিত অভিযোগ করেছেন সোহেলের বিরুদ্ধে, যেখানে তিনি ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ, পারিবারিক বিরোধের জেরে হেলাল মিয়া, তার স্ত্রী ও মেয়ে মারধরের শিকার হন। পরে চিকিৎসার জন্য আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান তারা। মামলা করার প্রয়োজনে মেডিকেল সার্টিফিকেট (এমসি) দরকার হলে হাসপাতালের মালির দায়িত্বে থাকা সোহেল মিয়া তা দিতে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ১০ হাজার টাকায় সমঝোতা হয়। সোহেল মিয়ার কাছে টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন হেলাল মিয়া।
পরে কথামত এমসি দিতে না পারায় সোহেল মিয়ার কাছে টাকা ফেরত চান সোহেল মিয়া। কিন্তু সোহেল মিয়া টাকা ফেরত না দিয়ে ঘুরাতে থাকে।
এতে ভুক্তভোগী হেলাল মিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন।
পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা সিভিল সার্জন বুধবার (২১ মে) অভিযুক্ত সুহেল মিয়াকে আখাউড়া থেকে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী করে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হিমেল খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ২০০৬ সালের ২২ জানুয়ারি ‘মালি’ পদে যোগ দেওয়া সোহেল মিয়া নিয়মিত দায়িত্ব পালন না করে জরুরি বিভাগে ড্রেসিং, সেলাইসহ বিভিন্ন চিকিৎসাকাজে যুক্ত বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী কয়েকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি গোপনে মেডিকেল সার্টিফিকেট বাণিজ্যে জড়িত। এছাড়াও মারামারিতে আহত রোগীর প্রেসক্রিপশনে পুলিশ কেস লেখার বিনিময়ে হাতিয়েছেন অর্থ।
এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান বলেন, ‘রোগী হেলাল মিয়ার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার লিখিত অভিযোগ পেয়ে সিভিল সার্জন মহোদয়ের কাছে পাঠাই। আজ সিভিল সার্জন মহোদয় সোহেল মিয়াকে আখাউড়া থেকে আশুগঞ্জ হাসপাতালে বদলীর আদেশ দিয়েছেন। দুপুরে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়েছি।’