× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ফুলবাড়ীতে ধান নিয়ে ধানাইপানাই কৃষকের

মাহফুজার রহমান মাহফুজ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ।

২২ মে ২০২৫, ১৬:০০ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

প্রবাদ আছে  কপালে না থাকলে ঘি ঠকঠকালে হবে কি? ভাগ্যে না থাকলে শত চেষ্টাতেও লাভ হয় না'। এবার ঠিক এমন পরিনতিই যেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর কৃষকদের।

উপজেলা জুড়ে গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টির ফলে চলতি মৌসুমের খেতের ধান ঘরে তুলতে হিমসিম খেতে হচ্ছে কৃষকদের। বৃষ্টির পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী মিলছে না শ্রমিকও। এখনো অনেক কৃষকের পাকা ধান খেতেই পড়ে রয়েছে। অনেকে আবার জমি থেকে ধান কেটে বাড়িতে আনলেও তা শুকাতে পারছেন না। সব মিলিয়ে বৃষ্টিতে ধান নিয়ে চলছে কৃষকদের ধানাইপানাই। 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক কৃষকের পাকা ধান এখনো মাঠেই পড়ে রয়েছে। গত ১০দিন ধরে কখনো হালকা, কখনো মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে নিচু জমির ধানের খেত ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কৃষকের বাড়ির উঠানে, রাস্তায়, মাঠে পাকা ধান নিয়ে এ ভোগান্তির যেন অন্ত নেই। কৃষকরা বারবার আকাশের দিকে তাকিয়ে রোদের প্রতিক্ষা করছেন। 

উপজেলার ঘোগারকুটি এলাকার কৃষক মজিবর রহমান। এ বছর তিনি ৭ বিঘা জমিতে বোরোধান আবাদ করেছেন। খেতের পাকাধান নিয়ে ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন এই কৃষক। মজিবর রহমান বলেন  আমার সব জমির ধান পেকেছে। ৩-৪ দিন ধরে কামলার পিছনে ঘুরছি। প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে ৫ হাজার করে টাকা চাচ্ছে। তাও দিতে রাজি হয়েছি। কিন্তু তাতেও কামলারা আমার ধান কেটে দিচ্ছেনা। তারা সময়ই পাচ্ছে না। এলাকায় একটা কম্বাইন হারভেস্টার এসেছিল। এর চালককেও ধান কেটে দিতে অনুরোধ করেছি। সেও আমার অনুরোধ রাখেনি। আরো অনেকের ধান কাটতে হবে বলে এলাকা থেকে চলে গেছে। এখন খেতের পাকাধান নিয়ে মহা বিপদে আছি। কপালে কি আছে উপরওয়ালাই ভালো জানেন।

একই এলাকার কৃষক আব্দুল গনি মিয়া জানান, তিনি আট দিন আগে তিন বিঘা জমির ধান কেটে বাড়িতে এনেছেন। সেই ধান মাড়াই করে ঘরে তুলেছেন। কিন্তু রোদ না থাকায় ধান ঘরেই পড়ে রয়েছে। তার ভেঁজা ধানে চারা গজাতে শুরু করেছে। 

পূর্ব ধনিরাম গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ জানান, তিনি এবারে আড়াই বিঘা জমিতে বোরোধান আবাদ করেছেন। এরমধ্যে ১৬ শতাংশ জমির ধান কেটে বাড়িতে এনে মাড়াই করে নিয়েছেন। রোদের অভাবে মাড়াই করা ধান শুকাতে পারছেন না। ধান থেকে পঁচা গন্ধ বের হচ্ছে। খেতের বাকি ধানও পেকেছে। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে ধান কাটতে পারছেন না। ধান নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে এই কৃষকের কপালে।

চন্দ্রখানা এলাকার কৃষক আলম মিয়া বলেন,  ধান আবাদ করে এবার এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি, মনে হয় কামলাদের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়েছি। বৃষ্টিতে ধান নিয়ে কি যে বিপদ। ধান কাটার লোকই পাওয়া যাচ্ছে না। পেলেও যে দাম চাচ্ছে তাতে জমির অর্ধেক ফসল বিক্রি করে তাদেরকে টাকা দিতে হবে। এ যেন কামলার মধ্যে সমান সমান ভাগ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন জানান, উপজেলায় এবছর ১০ হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে বোরোধান আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ১২৫ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে ১০হেক্টর জমির ধানখেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে খেতের ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ অনেকটা থমকে আছে বলেও জানান তিনি। 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.