× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার ও নার্সের সংকট,বাড়ছে শিশু ও বয়স্ক রোগী

মোঃএনায়েত হোসেন,নোয়াখালী প্রতিনিধি ।

২২ মে ২০২৫, ১৭:৫৮ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া।এই দ্বীপে প্রায় ৮ লক্ষ লোকজনের বসবাস। এখানকার মানুষের একমাত্র ভরসা দ্বীপের এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।এখানে এসে তারা যে সেবাটুকু পাচ্ছে এতে তাদের সন্তুষ্টি জনক নয় বলে জানান এলাকার জনগণ,কারণ ডাক্তারের চেয়ে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি বলে।

কিন্তু গত কয়েক বছর যাবৎ হাতিয়া ৫০ শয্যা  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার না থাকার করণে,রোগীরা বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এদিকে হাসপাতালে ২১ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও,৭ জন ডাক্তার দিয়ে পুরো হাসপাতালের রোগী দেখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

ফলে ডাক্তার না থাকার করণে রোগীগণ নোয়াখালী জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে বাদ্য হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে হাসপাতালে নার্সের অবস্থাও একেরুপ রয়েছে বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়। রোগীদের সেবা দেয়ার জন্য নার্স থাকার কথা ৩০ জন সেখানে ১০ নার্স দ্বারা পুরো হাসপাতালে রোগীদের দেখাশোনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

ফলে রোগীরাও সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এরপরও হাসপাতালে ২১ জন ডাক্তারের কাজ মাত্র ৭ জন ডাক্তার দিয়ে সেবা দিতে গিয়ে অনেক সময় সকলের মন জয় করতে পাচ্ছে না বলে জানান ডাক্তারগণ।অন্য দিকে হঠাৎ গরম বেড়ে যাওয়ায় ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। গত কয়েকদিনে হাতিয়ায় শিশু হাসপাতালের ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছে।

তবে হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় সেবা পেতে ভোগান্তি পেতে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। রোগীরা অল্প সময়ে কয়েকজন ডাক্তারের চিকিৎসা পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন রোগী ও স্বজনরা। তারা আরও বলেন, যদি অতি তাড়াতাড়ি যদি সরকার এই হাসপাতালে আরও ডাক্তার পাঠাই তাহলে এই দ্বীপ অঞ্চলের মানুষের সেবার মান আরও বাড়বে বলে জানান। 


অন্যদিকে অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতালের কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স ইনচার্জ মোছেনা আক্তার তামান্না।তিনি আরও বলেন,আমরা নার্স থাকার কথা ৩০ জন সে জায়গায় ১০ জন নার্স দিনরাত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এতে রোগীরাও মুটামুটি সন্তুষ্টি পায়।

এদিকে সকালে হাসপাতালে  সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,সকাল থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে লম্বা লাইন,তার ওপর নেই কোন ডাক্তার। গরমে অসুস্থ শিশুদের নিয়ে বিপাকে অভিভাবকরা। কারও কারও সেবা নিতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।এখানেও সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
রোববার সকাল ১০টার দিকে ছোট্ট শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে হাজির হোন সোনাদিয়া ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা মোঃ হানিফ উদ্দিন শাকিব। তিনি জাতীয় দৈনিক সংবাদ সারাবেলাকে বলেন,দুই ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখনও আমার আগে ৪০ থেকে ৫০ জন দাঁড়িয়ে আছে। অসুস্থ সন্তান নিয়ে কি এতো সময় অপেক্ষা করা যায়?কারণ হাসপাতালে যতজন ডাক্তার থাকার কথা তার চেয়ে অনেক কম ডাক্তার রয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জরুরি বিভাগ চলছে মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে। রোগীর যে দীর্ঘ লাইন তাতে দুই থেকে তিন ঘণ্টায় কমে কারও পক্ষে চিকিৎসা নিয়ে ফেরা সম্ভব নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোগীর চাপ বাড়ায় জরুরি বিভাগে ২১জনের পরিবর্তে ৭জন চিকিৎসক দেওয়া হয়েছে। তবুও হিমশিম খেতে হচ্ছে।সব সময় সেবা দেওয়ার মতো চিকিৎসক হাসপাতালে নেই। তারপরও রোগীদের সঠিক সেবা দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশেষ করে রাতের বেলায় হাসপাতালের ১০০/১৫০ জন রোগীর ভরসা জরুরি বিভাগের ৫/৭ জন চিকিৎসকের। ফলে সব চাপ এসে নার্সদের ওপর পড়ে। অনেক সময় রোগীর স্বজনেরা বিরক্ত হয়ে নার্সদের বকাঝকা করেন।

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মানসী রানী সরকার বলেন, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছি। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছে।তিনি আরও বলেন, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার রোগীর সংখ্যা বাড়লেও পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স না থাকায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের আরও যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।এছাড়াও তিনি হাসপাতালে যেসকল সমস্যা গুলো রয়েছে সে বিষয়ে বলেন,আমি আসার পর থেকে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ডাক্তার, নার্স,সিকিউরিটি গার্ড এবং সুইপারে যে সকল শূন্য পদ রয়েছে ঐ সকল পদের জন্য আবেদন পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখন নতুন করে কোন ডাক্তার আসছে না।

তারপর আমরা যেখানে ২১ জন ডাক্তার থাকার কথা কিন্তু আমরা ৭ জন ডাক্তার পূরণ করতেছি এছাড়া আমাদের ৩০ জন নার্স থাকার কথা কিন্তু সেখানে আমরা ১০ নার্স দিয়ে পুরো হাসপাতাল চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি রোগীদের সঠিক সেবা দেয়ার জন্য কিন্তু এই সঠিক সেবা দিতে গিয়ে আমরা অনেক রোগী বা,রোগীদের স্বজনের খারাপ কথা ও শুনতে হয়।আমি জেলা সিভিল সার্জন অফিসে ডাক্তার এবং নার্স,সিকিউরিটি গার্ড,সুইপারের জন্য আবেদন করেছি, যদি জেলা সিভিল সার্জন আমার হাসপাতালে যেসকল শূন্য পদ রয়েছে ঐ সকল পদে ডাক্তার,নার্স,সিকিউরিটি গার্ড,সুইপার পাঠাই তাহলে আশা করি হাতিয়ার মানুষ আর জেলা সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন হাসপাতালে যাওয়া লাগবে না এবং এখানে ভালো চিকিৎসা পাবে বলে আমার বিশ্বাস। আমরা ডাক্তার, নার্সের জন্য রোগীদের সেবা দিতে পাচ্ছি না। তারপরও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।ডাক্তার, নার্স আসা পর্যন্ত।

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বারবার ডাক্তারের জন্য চিঠি পাঠানোর পরও কোন ডাক্তার পাঠানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ মানসী রানী সরকার।এদিকে একটি দূর্ভোগ উপকূলীয় এলাকার জনগণ খুবই অসহায়ের মতো রয়েছে। তারা বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগছে। এধরণের উপকূলীয় অঞ্চলে ডাক্তারের খুবই প্রয়োজন।তাই  কেন হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার পাঠানো হচ্ছে না এসব বিষয়ে কথা হলে নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা:মরিয়ম সিমি বলেন।,আমি উপরস্থ কর্মকর্তাদের বিষয় টা জানিয়েছি। তারা আমরা বলেছেন ডাক্তার, নার্সের একটু সংকট রয়েছে বিদায় আমরা হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার,নার্স পাঠাতে পাচ্ছি না।তারপরও নতুন প্রজেক্ট আছে সামনে আমরা আশা করি ঐ প্রজেক্টের মাধ্যমে ডাক্তার, নার্স নিয়োগ করা হবে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।তখন আর রোগীদের সেবা দিতে আর সমস্যা হবে না।তখন পর্যাপ্ত পরিমানে রোগীর তুলনায় ডাক্তার,নার্স থাকবে।আমার কাছে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আবেদন আসছে এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ডাক্তার, নার্স না দিলে আমার  তো কিছুই করার নেই তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.