রংপুরের বদরগঞ্জে দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত দুঃস্থ মাতা(ভিডব্লিউবি)’র চাল টাকা ছাড়া মিলছে না এমন অভিযোগ উঠেছে গোপালপুর ইউনিয়নের দু’ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য-সোমবার(২৬মে) গোপালপুর ইউনিয়নে ভিডব্লিউবি’র চাউল বিতরন করা হয়।
জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত মোট পাঁচ মাসের দুঃস্থ মাতা বা ভিডব্লিউবি’র চাল বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আর এক সঙ্গে পাঁচ মাসের চালের বরাদ্দ নিয়ে চলছে মেম্বারদের আর্থিক লেনদেন। মেম্বাররা যেভাবে পারছেন উপকারভোগীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। সরেজমিন গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চাল বিতরণ কার্যক্রম পরিদর্শণকালে এমনই চিত্র উঠে ফুটে উঠেছে। ওই ইউনিয়নে কার্ডধারী দুঃস্থ মাতার সংখ্যা ৩৪৪ জন হলেও অনিয়মের কারণে ১৪ জনের নাম বাতিল হয়েছে। বর্তমানে তালিকাভুক্ত উপকারীভোগীর সংখ্যা ৩৩০ জন।
কথা হয় ৪নং ওয়ার্ডের মনসুর আলীর সাথে। তিনি স্ত্রীর নামে বরাদ্দকৃত চাল নিতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, প্রতি বস্তা চালের জন্য আকতারুল মেম্বারকে ২শ’-৩শ’টাকা করে প্রদান করতে হয়েছে। আমি অবশ্য ২শ’ টাকা করে পাঁচ বস্তার জন্য ১ হাজার টাকা তাকে দিয়েছি। তবে অন্যরা ৩শ’ টাকা করে ১৫শ’ টাকা মেম্বারকে দিয়েছেন। ওই ওয়ার্ডের আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, আমি প্রথমে আক্তারুল মেম্বারকে ৫শ’ টাকা দিয়েছিলাম কিন্তু মেম্বার তা’ গ্রহণ করেননি। একারণে আরো ১শ’ টাকা জোগাড় করে মোট ৬শ’ টাকা মেম্বারকে দিয়েছি। ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাশেদা বেগম স্থানীয় ভাষায় বলেন, এবারে পাঁচ বস্তা করি চাউল দেওচে সেই চাউলের জন্য মশিউর মেম্বারোক ২হাজার টাকা করি দিব্যার নাগোচে। একই ওয়ার্ডের রুপালি বেগম বলেন, মোরটে খালি ৫শ’ টাকা আচিল। ওইট্যায় মেম্বারোক দিচু। আর অনুরোদ করি কচু মোক চাউল তুলব্যার দ্যাও। মুই চাউল ব্যাচে বাকি টাকা দিয়্যা দেইম। ওই ওয়ার্ডের আফরোজা বেগম বলেন, মেম্বার হামার নেজের মানুষ। চাউল তোলার পর হামরা খুশি হয়্যা যেটা দেমো সেটায় মেম্বার নেবে।
এ বিষয়ে ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার আক্তারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কারো কাছ থেকে টাকা চাইনি। তবে অনেকেই খুশি হয়ে আমাকে টাকা দিয়েছেন। ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার মশিউর রহমান বলেন, চাল নিতে আশা ব্যক্তিরা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম বলেন, যদি ভিডব্লিউবি’র চালের বিনিময়ে কোন ইউপি সদস্য টাকা নিয়ে থাকে হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার সাবিকুন্নাহার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে মেম্বারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, সুস্পষ্ট প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।