ঈদুল আজহা সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কর্মকাররা। কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় দা, ছুরি, চাপাতি, বঁটি তৈরি ও শাণ দেওয়ার কাজে দিনরাত এক করে কাজ করছেন তারা।
সীতাকুণ্ডের পৌর এলাকা, সৈয়দপুর, বাড়বকুণ্ড, কুমিরা, মুরাদপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে রয়েছে বহু পুরনো কর্মকার পল্লী। এখানকার কারিগরদের তৈরি দেশি লোহার দা-ছুরি ও অন্যান্য সরঞ্জাম মানসম্পন্ন হওয়ায় স্থানীয়ভাবে যেমন চাহিদা রয়েছে, তেমনি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকেও পাইকাররা অর্ডার নিয়ে আসছেন।
সৈয়দপুরের একজন কর্মকার সুমন বলেন, “কোরবানির আগে আমাদের সারা বছরের সবচেয়ে ব্যস্ত সময় যায়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করি। অর্ডার বেশি, সময় কম। সময়মতো ডেলিভারি দিতে সবাই হিমশিম খাচ্ছে।”
একই গ্রামের আরেক কর্মকার লিটন বলেন, “আমরা বংশ পরম্পরায় এই কাজ করছি শত বছর ধরে। এখন ঈদকে সামনে রেখে দা, চাপাতি, বটি, ছুরি বানানোর পাশাপাশি পুরনো জিনিস ধার দেওয়া ও মেরামতের কাজও করছি। তবে অনেক সময় ভালো মানের কাঁচামাল ও আধুনিক যন্ত্র না থাকায় গ্রাহকের চাহিদা মতন কাজ করতে পারছিনা আর আর্থিক সমস্যতো আছেই।”
কারিগরদের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা না পাওয়ায় তারা অনেক সময় কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন করতে পারেন না। বিশেষ করে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও যন্ত্রপাতির ঘাটতি কাজের গতিকে প্রভাবিত করছে।
তবে আশার কথা হলো, কোরবানির মৌসুমে এই কর্মকাররা যেমন ব্যস্ত, তেমনি তাদের আয়ও তুলনামূলকভাবে বাড়ে। প্রতিটি দা বা ছুরি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৮০০ টাকায়, মান ও আকার অনুযায়ী। এক একজন কারিগর দিনে তৈরি করছেন ১০-১৫টি পর্যন্ত সরঞ্জাম।
"ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, কর্মব্যস্ততাও ততই বাড়ছে। কোরবানির জন্য প্রয়োজন হয় নানা ধরনের ধারালো সরঞ্জাম—আর এসব সরঞ্জাম প্রতিটির পেছনেই আছে শ্রমজীবী কর্মকারদের ঘাম ঝরানো পরিশ্রম। তাদের এই নিরলস প্রচেষ্টা ঈদের প্রস্তুতির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ।"