একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম আপিল মঞ্জুর করে তাঁকে খালাস দেওয়ায় তাঁর গ্রামের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জে নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে মিছিলটি বদরগঞ্জ পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে তাঁরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় উচ্ছ্বাসের পর দু’ হাত তুলে আল্লাহতায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করে এটিএম আজহারুলের সুস্থতা ও দীর্ঘয়ূ কামনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা-হত্যা,অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে।
২০১২ সালের ২২ আগস্ট মগবাজার থেকে আজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বদরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির কামরুজ্জামান, রায়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। এই বিষয়ে আমাদের মিষ্টি বিতরণের কিছু নেই। তবে মনের মধ্যে আনন্দ আছে। এজন্য আমরা আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
বদরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মেনহাজুল ইসলাম বলেন, একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে ফ্যাসিস্ট সরকার এতদিন জেলে বন্দি করে রেখেছিল। সত্যকে কখনও দাবায় কেউ রাখতে পারেনি। আজকের রায় সেটাই প্রমাণ করেছে। দেশবাসীর মতো আমরা বদরগঞ্জবাসীও আজকের এই রায়ে ভীষণ খুশি।
এটিএম আজহারুল ইসলামের বড় ভাই এটিএম আব্দুল আউয়াল বলেন, দীর্ঘদিন পর আমার ছোট ভাই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আমরা তাকে আমাদের কোলে ফিরে পাব, নিজ জন্ম ভিটায় ফিরে পাব। এটা আমাদের জন্য আনন্দের খবর। এজন্য আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া।
প্রসঙ্গত, এটিএম আজহারুল ইসলাম রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের বাতাসন ডাক্তার পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রথম সভাপতি ছিলেন তিনি।
গ্রেপ্তারের আগে তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন।
তিনি ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-২ (তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ) আসন থেকে ডাড়িপাল্লা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এবারেও তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে।