মৌলভীবাজারের বড়লেখায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে সহযোগি নিয়ে শ্বশুড় বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েও শেষ রক্ষা পায়নি পাষন্ড স্বামী সুয়েল আহমদ (২৮)। স্বজন ও এলাকাবাসির সহযোগিতায় রাতেই পুলিশ সুয়েল আহমদকে আটক করেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে নিহত গৃহবধুর লাশ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করেছে থানা পুলিশ।
এব্যাপারে নিহত গৃহবধুর বাবা হাজী আব্দুল লতিফ জামাতা সুহেল আহমদকে প্রধান আসামি ও অপরজনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। বুধবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) কামরুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ ও নিহত গৃহবধুর বাবার বাড়ির সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর পূর্বে বড়লেখা সদর ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের প্রবাস ফেরত যুবক পূর্বের বিয়ে গোপন করে উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের টেকাহালী গ্রামের হাজী আব্দুল লতিফের মেয়ে নাদিয়া বেগমকে (২১) বিয়ে করে। সম্প্রতি সুয়েল আহমদের আগের বিয়ের বিষয়টি স্ত্রী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের মধ্যে প্রকাশ পায়। এরজেরে ৩ দিন আগে নাদিয়া বেগম বাবার বাড়িতে চলে আসে। মঙ্গলবার দুপুরবেলা সোয়েল আহমদ শ্বশুড় বাড়িতে গিয়ে আছরের আজানের পর বিদায় নিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যায়।
নিহত গৃহবধুর চাচাতো ভাই ইসলাম উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার রাত ১২টার পরে সুয়েল আহমদ তার শ্বশুড়কে ফোন করে জানায় নাদিয়া শয়নকক্ষে কি যেন করতেছে, গিয়ে দেখতে। এরপর বাড়ির লোকজন গিয়ে দেখেন দরজা খোলা, ফ্যানের সাথে ঝুলে থাকলেও পা মাটিতে রয়েছে নাদিয়ার। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর রাতেই সোয়েল আহমদ শ্বশুড় বাড়িতে গিয়ে নাদিয়া বেগমের মোবাইল ফোন আয়ত্বে নিতে চরম উত্তেজনা চালায়। তাদের অভিযোগ সুয়েল আহমদ ফোন করে নাদিয়াকে দরজা খুলতে বলেছিল। অজ্ঞাত সহযোগি নিয়ে ঘরে ঢুকে নাদিয়াকে শ্বাসরুদ্ধে হত্যার পর আত্মহত্যা সাজাতে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। তাদের প্রশ্ন নাদিয়া আত্মহত্যা করলে তার শয়নকক্ষের দরজা খুলা থাকবে কেন। নাদিয়ার ফোন থেকে তার করা কল ডিলিট করার জন্য সে পাগলের মতো ফোন আয়ত্বে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
বড়লেখা থানার ওসি মো. আবুল কাশেম সরকার জানান, ময়না তদন্ত শেষে নিহতের লাশ বুধবার বিকেলে স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এব্যাপারে নিহত গৃহবধুর বাবার অভিযোগে সোয়েল আহমদকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর আসল কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।