আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে চট্টগ্রামের কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠতে শুরু করেছে। নগরের সাগরিকা, বলিরহাট, ষোলশহর, খুলশী ও আনোয়ারার সরকারি হাটে ইতোমধ্যে দেশি ও উন্নত জাতের গরু-ছাগল আনা শুরু করেছেন খামারি ও বিক্রেতারা। তবে গরুর দাম বেশি হওয়ায় ভিড় থাকলেও অনেক ক্রেতাই ‘দেখে যাচ্ছেন, কিনছেন না।’
পশুর সরবরাহে ভিন্নতা, চাহিদা মাঝারি গরুতে নগরের অন্যতম বড় হাট সাগরিকায় গতকাল দেখা গেছে, গরুর সরবরাহ তুলনামূলকভাবে ভালো। বড় আকৃতির উন্নত জাতের গরুর পাশাপাশি দেশি মাঝারি আকারের গরু ক্রেতাদের নজর কেড়েছে। কিছু গরু এসেছে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা থেকে।
সাগরিকা হাটে গরু নিয়ে আসা পাবনার খামারি সোহেল রানা বলেন, “চালান খরচ, গবাদি পশুর খাবার ও ওষুধের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। তাই গরুর দাম একটু চড়া। তবে ঈদের এক সপ্তাহ আগে ক্রেতা বেশি হয়।”
ক্রেতার অভিযোগ: পছন্দের গরু নেই, দামও বেশি সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, এখনো অনেকেই বাজার যাচ্ছেন ‘দাম বোঝার’ জন্য। মুরাদপুর থেকে হাটে গরু দেখতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আরিফ বিল্লাহ বলেন, “আমাদের তিন পরিবার মিলে মাঝারি আকৃতির একটি গরু কিনবো ভেবে এসেছি। তবে যেসব গরু পছন্দ হচ্ছে, দাম চড়া।”
মাঝারি একটি গরু ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাচ্ছেন বিক্রেতারা, যা অনেকের নাগালের বাইরে। নিরাপত্তা ও জাল টাকা শনাক্তে উদ্যোগ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হাটগুলোতে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন হাটে টহলে থাকবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) এক কর্মকর্তা। এছাড়া পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও জাল টাকা শনাক্তে মোবাইল ইউনিট থাকবে হাটে হাটে।
চামড়ার নতুন দাম নির্ধারণে আলোচনার সূত্রপাত ঈদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কোরবানির পশুর চামড়া। এবারও সরকার ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে। খাসি ও বকরির চামড়ার দাম নির্ধারিত হয়েছে যথাক্রমে ২২-২৭ এবং ২০-২২ টাকা বর্গফুট। চট্টগ্রামের ট্যানারি ও আড়ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাস্তবে এই দাম কতটা পাওয়া যাবে তা ঈদের দিন বোঝা যাবে।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের হাটগুলোতে বেচাকেনা শুরু হলেও দাম ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। একদিকে খামারিরা লাভের আশা করছেন, অন্যদিকে ক্রেতারা অপেক্ষা করছেন শেষ সময়ে কিছুটা দামে স্বস্তি পেতে। প্রশাসন বলছে, সব হাটেই নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।