× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

অনিয়ম-অবহেলা ও সংকটে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

শরীয়তপুর প্রতিনিধি।

২৯ মে ২০২৫, ১৭:৫৫ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম ও চিকিৎসক সংকট যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। রোগীরা অফিস সময়ে ঠিক মতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ বিস্তর। তবে যে কয়জন ডাক্তার রয়েছেন তারাও দিনের বেশির ভাগ সময়ে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখেন। ফলে চিকিৎসক সংকট ও ডাক্তারদের বাইরে রোগী দেখায় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।

রুগীর স্বজন ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় ঔষধ, যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকা সহ ডাক্তারদের অনিয়ম ও অবহেলার কারণে সঠিক চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না সাধারণ রোগীরা। দৈনিক ওষুধ সরবরাহের তালিকায় রোগীদের ওষুধ দেওয়ার বিধান থাকলেও তেমন কোনো ওষুধই দেওয়া হয় না।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে হাসপাতালের ডাক্তারদের সখ্যতা থাকায় কমিশনের বিনিময়ে তাদের ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লিপিবদ্ধ করে থাকেন। এছাড়া হাসপাতালে শিডিউল অনুসারে রোগীদের খাবার দেওয়া হয় না। এছাড়া রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে হাসপাতালটির স্টাফরা।
গত কয়েকদিন ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগী সিটে থাকলেও অধিকাংশ ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা ছিলেন অনুপস্থিত। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আসতে থাকেন ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা। হাসপাতালে দীর্ঘ সময় অপেক্ষমাণ চার-পাঁচ মাসের শিশুদের কোলে নিয়ে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার আসায় বসে আছেন মায়েরা। তবে হাসপাতালে অপেক্ষমাণ রোগীর চেয়ে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা যায়।  

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা নিতে আসা স্থানীয় রোগী ও রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা  ডাঃ শাহ্ আলম সিদ্দিকী অধিকাংশ সময়ে কার্যালয়ে থাকেন না। অফিস চলাকালীন বেশির ভাগ সময় মিটিং করার অজুহাতে বাইরে থাকেন। ওয়ার্ড বয় ও অন্য স্টাফদের দিয়ে রোগীদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন অফিসিয়াল কার্যক্রম চলছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আর এসবই নাকি হচ্ছে  ডাঃ শাহ্ আলম সিদ্দিকী'র ছত্রছায়ায়। এসময় ভুক্তভোগী রোগী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপকালে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরেন তারা।

পূর্ব ডামুড্যা থেকে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রাসেল শিকদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, "আমার শিশু সন্তান নিয়ে দুদিন ধরে বসে আছি। প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছি না। হাসপাতালে খাবার-দাবারের মানও ভালো না। চিকিৎসকরা ঠিক মতো আসেন না রোগীর কাছে। নার্স ও আয়ারাও ভালো ব্যবহার করেন না। সবকিছু বাহির থেকে কিনে আনতে হয়। বিভিন্ন পরিক্ষাও করাতে হয় ক্লিনিক থেকে"। 

ধানোকাঠী এলাকার বাসিন্দা সুরাইয়া বেগম নামে একজন মা বলেন, "আমার শিশুকে নিয়ে এসেছি ডাক্তার দেখাতে। এখন ভিতরের এক আপা বললো এখানে চিকিৎসা ভালো হবে না আপনি কোন ক্লিনিকে অথবা সদর হাসপাতালে নিয়ে জান। ডায়রিয়া রোগী, চিকিৎসার জন্য ডাক্তার ও ওষুধ কোনটিই পাচ্ছি না। তার অভিযোগ ডাক্তাররা নিয়মিত না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে রোগীরা"।

ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাহ্ আলম সিদ্দিকী এর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমাদের হাসপাতালে কিছুটা দালালের দৌরাত্ম্য আছে তবে সিকিউরিটি গার্ড না থাকায় সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট রয়েছে তাই রুগীদের চিকিৎসা দিতে একটু সমস্যা হয়। তবে তার অধিকাংশ সময়ে কার্যালয়ে না থাকা সহ বিভিন্ন  অনিয়ম ও অবহেলার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান"।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রেহান উদ্দিন বলেন, "অফিস টাইমে বাইরে চিকিৎসকরা রোগী দেখার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে"।  


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.