ছাত্রদল নেতার ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন সকালে তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার উপপরিদর্শক এ কে এম হাসান মাহমুদুল কবীর কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম জামিনের আবেদন করেন, যা রাষ্ট্রপক্ষের বিরোধিতার পর আদালত খারিজ করে দেন।
আলোচ্য মামলাটি করা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৯ জুলাই, ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিপরীত পাশে স্টার হোটেলের সামনে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে। অভিযোগে বলা হয়, সেদিন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অংশ হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল বিক্ষোভ করছিল। এ সময় একদল ব্যক্তি ছাত্রজনতার ওপর হামলা চালায়, এতে তৎকালীন শাখা সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা চোখে গুলিবিদ্ধ হন এবং দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এ ঘটনার সাত মাস পর, ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, সুজন মোল্লা সূত্রাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের ৯৪ জনসহ মোট ১৯৩ জনকে আসামি করা হয়। আনোয়ারা বেগম এই মামলার ৪৩ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
গ্রেপ্তারের আগের দিন, আনোয়ারা বেগমকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকদের আপগ্রেডেশন বোর্ডের সভায় উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মেজবাহ উল আজম সওদাগর জানান, বিভাগ থেকে তাঁকে ডাকেনি; রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকেই তাঁকে ডাকা হয়েছে।
মামলার বাদী সুজন মোল্লা বলেন, “এদের মতো দলকানা শিক্ষকদের জন্য স্বৈরাচার আমলে শিক্ষক সমাজ কলঙ্কিত হয়েছিল। উনি বলতেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যারা কাজ করে তারা রাজাকার। আর যেহেতু ছাত্রদল-শিবির আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাই এরা রাজাকার। তিনি পিএসসি’র সদস্য থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে বিসিএসের জন্য উত্তীর্ণ করতেন না।”