কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন ৪৭ বিজিবি'র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় ৩১ মে ২০২৫ খ্রিঃ তারিখ সকাল আনুমানিক ১০.০০ ঘটিকায় কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীনস্থ আশ্রায়ন বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ১৫৪ হতে আনুমানিক ৩ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত ঘাট এলাকায় একটি নৌকা থেকে ০৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নামতে দেখা যায়। স্থানীয় জনগণের সন্দেহ হলে তারা বিষয়টি আশ্রায়ন বিওপিকে অবহিত করে।
বিজিবির নিয়মিত টহল দল তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংশ্লিষ্ট ০৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদপূর্বক হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দুটি পৃথক পরিবার এবং প্রায় ৪ (চার) বছর পূর্বে কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার বামনহাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে। তারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের দিল্লি রাজ্যের অন্তর্গত উত্তর-পশ্চিম দিল্লি জেলার রামপুরা থানার অধীনস্থ একটি এলাকায় ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিল।
তারা আরো জানায়, সম্প্রতি ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ধরপাকড়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এবং আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো হয়রানি না করার সরকারি ঘোষণায় উৎসাহিত হয়ে নিজেরাই স্থানীয় পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার অভিপ্রায় প্রকাশ করে।
পরবর্তীতে ৩০ মে ২০২৫ তারিখে তাদেরকে ভারতের জলঙ্গি থানার নিকটবর্তী একটি বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে থেকে বিএসএফ কর্তৃক কাঁটাতারবিহীন চরাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে অদ্য রাত ০০.৩ ঘটিকায় বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়। বাংলাদেশে প্রবেশের পর তারা পায়ে হেঁটে ও ভাড়াকৃত মোটরসাইকেলে চলাচল করে ভাগজোত ঘাট এলাকায় এসে উপস্থিত হয়।
বিএসএফ কর্তৃক পুশ-ইন করা উক্ত ০৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক বর্তমানে বিজিবির হেফাজতে রয়েছে এবং তারা শারীরিকভাবে সুস্থ আছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে ৪ জন পুরুষ, ২ জন নারী, ২ জন কিশোর এবং ১ জন শিশু।
বিষয়টি বিজিবি কর্তৃপক্ষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে ঘটনার পরপরই সংশ্লিষ্ট থানা ও বিএসএফের সাথে যোগাযোগ করে। আজ সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় সীমান্ত পিলার ৮৫/১০-এস এর নিকটবর্তী স্থানে বিজিবি চর চিলমারী কোম্পানি ও প্রতিপক্ষ ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের জলঙ্গি কোম্পানি কমান্ডারের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিজিবি পুশ-ইনের বিষয়ে প্রতিবাদ জানালে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে। তবে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হস্তান্তর নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বিএসএফ কর্তৃক প্রচলিত আইনানুগ প্রক্রিয়ায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে হস্তান্তর না করে পুশ-ইন কার্যক্রম পরিচালনার বিরুদ্ধে বিজিবি পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। একইসাথে, প্রতিপক্ষ ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে অংশগ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।