ফেনীর পরশুরামে নো ম্যানস ল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার রাতে খালের বাকি অংশ খননের চেষ্টা করলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও স্থানীয়দের বাধায় পিছু হটেছে ভারতের বিএসএফ ও ভারতীয়রা।
শনিবার (৩১ মে) দুপুরে বিএসএফের উপস্থিতিতে আবারো খনন কাজ শুরু করেন ভারতীয়রা। এসময় এলাকাবাসী টের পেয়ে সঙ্গবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ জানান।
শনিবার (৩১ মে) দুপুরে মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্ব রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে বল্লামুখার বেড়িবাঁধ থেকে প্রায় ১০০ গজ উত্তরে নো ম্যানস ল্যান্ডের ১৫০ মিটারের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
নুরুল করিম নামে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শনিবার দুপুরে ১০-১৫ টি এস্কেভেটর দিয়ে ভারতীয়রা খালখনন কাজ আবার শুরু করে, বিষয়টি টের পেয়ে আমরা গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ জানাই কিন্তু তারা তাদের কাজ চলমান রাখে।
এর আগে গত বুধবার (২১ মে) রাতে কালিকাপুর থেকে পূর্ব রাঙ্গামাটিয়া পর্যন্ত প্রায় দেড়শ মিটার নতুন খাল খনন কাজ শেষ করেছে ভারতীয়রা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরশুরামের পূর্ব রাঙ্গামাটিয়া সীমান্তে পিলার ঘেষে উঁচু টিলা কেটে খাল খনন করেছে ভারত। ভারতের বিলোনিয়া শহর ও আশপাশের এলাকায় পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে বাংলাদেশের দিকে পানি নামতে নতুন এই খাল খনন করছেন বলে স্থানীয় এলাকাবাসী জানান।
জানা গেছে, গত বছরের আগস্টে মুহুরী নদী সংলগ্ন এলাকায় ভারতীয়রা বল্লামুখা বেড়িবাঁধ কেটে দিলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণ করে। এতে ভারতীয়রা তাদের অংশে জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় নতুন এ খাল খনন করছে।
রাঙ্গামাটিয়া এলাকার আব্দুর রহমান বলেন, এই খাল খননের কারণে নিজ কালিকাপুর ও রাঙ্গামাটিয়া সহ পরশুরামের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে।
স্থানীয় পূর্ব রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা মমতাজ মিয়া (৬০) জানান, বৃহস্পতিবার রাতে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে স্কেভেটর ও যন্ত্রপাতি নিয়ে খালের অবশিষ্ট অংশ খননের চেষ্টা করে বিএসএফ ও ভারতীয়রা। সীমান্তের পিলার থেকে ২০-৩০ গজ ভেতরে তারা খনন করার চেষ্টা করে। আমরা বিজিবির সঙ্গে উপস্থিত থেকে তাদের বাধা প্রদান করলে, তারা চলে যায়।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, ভারতের সুবিধার্থে সীমান্তে টিলা কেটে পানি বাংলাদেশের ভেতরে ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। বিজিবি ও স্থানীয় মানুষ এটি প্রতিরোধ করেছে। আমরা সতর্ক রয়েছি। এ ধরনের কাজ আমরা করতে দেব না।
বিজিবি ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোশারফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ অংশে বাঁধ দেয়ার ফলে যে পানি জমে তা সরানোর জন্য তারা একটা মোটা ড্রেন করে ভারতের অংশে। শূন্য লাইন থেকে ভারতের দিকে ১৫০ গজের মধ্যে পড়ায় সেটার আমরা প্রতিবাদ করি। নো ম্যানস ল্যান্ডে স্থাপনা তৈরি উভয় দেশের আইনে নিষেধ রয়েছে। তাদের খাল খননের জায়গা নো ম্যানস ল্যান্ডে হওয়ায় কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে । বিজিবি-বিএসএফ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।