× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মৌলভীবাজারে বৃষ্টি অব্যাহত, উজানের ঢলে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বন্যার শঙ্কা

মো: আব্দুল কাইয়ুম,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।

০২ জুন ২০২৫, ১৬:০৬ পিএম

ছবিঃ সংবাদ সারাবেলা।

মৌলভীবাজার জেলা জুড়ে গত ৪দিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে এমন বৃষ্টিপাত দেখেননি এ অঞ্চলের মানুষ। কখনো অবিরাম বৃষ্টিধারা। আবার কখনো কিছুটা থেমে থেমে ঝরছে বৃষ্টি। সেই সাথে রয়েছে অবিরাম পাহাড়ী ঢল। ইতিমধ্যে টানা বৃষ্টি আর আর উজানের ঢলের পানিতে জেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রামীণ জনপদের খাল-বিল আর বিস্তৃর্ণ হাওর-বাওর বৃষ্টির পানিতে একদম টইটম্বুর।

পাশাপাশি অব্যাহত বেড়ে চলেছে মনুনদী সহ জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি প্রবাহ। বিশেষ করে প্রতিনিয়ত হুঁহুঁ করে বাড়ছে মনুনদী ও ধলাই নদীর পানি। সর্বশেষ ২০২৪ সালেও মৌলভীবাজার সদর ও কমলগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু স্থানে মনু ও ধলাই নদীর প্রতিরক্ষাবাধ ভেঙ্গে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। এবারও বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ফের বাড়ছে বন্যাতঙ্ক। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বন্যার আতঙ্ক বিরাজ করে। বাড়ে দুর্ভোগ।  

জানা যায়, মৌলভীবাজার শহরের কোল ঘেঁসে বয়ে চলা মনু নদীর নাব্যতা সঙ্কট নিরসনে পরিকল্পিত উন্নয়ন না হওয়া, বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে মনু নদীর বাঁধ নির্মানে হাজার কোটি টাকার উন্নয়নের মুখ থুবরে পড়া মুলত বন্যার আশঙ্কাকে আরও প্রবল করে তুলেছে। সচেতন মহলের দাবী এ অঞ্চলের মানুষকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে মনুনদীর দু‘পাড়ে শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণ ও নাব্যতা সঙ্কট দূর করে কাঙ্খিত উন্নয়ন হলেই স্বস্তি পাবে এই জনপদের বাসিন্দারা। বন্যা ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবে নদী পাড়ের সাধারণ মানুষ।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর জাতীয় পরিষদ সদস্য ও মনু বয়েজ অব রিভার এর সিইও আসম সালেহ সোহেল বলেন, মনু নদীর তলদেশ খনন করতে হবে। আমাদের খালবিল আর নেই। হাওর গুলোতেও ফিশারীর কারণে পানির ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। এখন অতিবৃষ্টি হলে পানি নামার জায়গা নেই। হাওরের ফিসারী উচ্ছেদ করে হাওর খনন করতে হবে। তিনি বলেন, মনুনদী একটি আর্ন্তজাতিক নদী হওয়া সত্বেও আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত আমাদের সাথে বিমাতাসূলভ আচরণ করে। কারণ আমাদের বাঁচতে হলে প্রয়োজন ওয়াটার রিজার্ভ। এই ওয়াটার রিজার্ভ করতে হলে নদী খনন করতে হবে, ভারতের সাথে আমাদের নদী চুক্তি করতে হবে। যেহতেু ভারত উজানে আর আমাদের অবস্থান ভাটিতে।  

এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় দুর্যোগ কবলিত জনসংখ্যা ৮ হাজার ৪শত ৭৩ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছো ২শত ৭৪ জন। এদের মধ্যে অনেকের বাড়ি থেকে পানি সরে যাওয়ায় এখন আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন ৭২ জন। আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে ১২৬টি। প্রতি উপজেলায় শুকনো খাবার সহ আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা বানবাসীদের সহায়তার জন্য ৩লক্ষ টাকা করে ৭টি উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে মোট ২১ লক্ষ টাকা নগদ অর্থ। বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে ১৩০ মেট্রিক টন চাল। বন্যা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পুলিশ সুপার ও সেনা কর্মকর্তার সমন্বয়ে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের তরফে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ৫০ লক্ষ টাকা অর্থ বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে।

সরেজমিন সোমবার (২ জুন) দুপুর ১টার দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী মনু নদীর চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। পাশাপাশি ধলাই নদীর পানি ১৬১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর কুশিয়ারা নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ১৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জেলার সীমান্তবর্তী জুড়ী নদীর পানি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন ওয়ালিদ বলেন, নদীতে পানি বাড়ছে। রাজনগর উপজেলার মনুনদীর কয়েকটি প্রতিরক্ষাবাঁধ সহ আদিনাবাদ ও একামধু নামক স্থানটি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে নিশ্চিত করে তিনি বলেন, এসব স্থানের ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা সারাক্ষণ মাঠেই আছি।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো: ইসরাইল হোসেন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। গঠন করা হয়েছে মনিটরিং সেল। ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ঝুঁকি মোকাবেলায় বালির বস্তা ফেলার জন্য।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.