চলমান তীব্র তাপদাহ আর অসহনীয় রোদের মধ্যেও জমে উঠেছে নাটোরের সিংড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কোরবানির গরুর হাট।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যাপারীরা গরু নিয়ে আসছেন এ হাটে, আর স্থানীয় ও আশপাশের এলাকার হাজারো ক্রেতা ভিড় করছেন পছন্দের পশু কেনার আশায়।
সোমবার (২ জুন) সকাল থেকেই সিংড়া পৌর হাটে ছিল উপচে পড়া ভিড়। হাটে দেশি জাতের গরুর দেখা গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা দেখা গেছে মাঝারি আকৃতির দেশি গরুর প্রতি। অনেক ক্রেতা সকাল সকাল এসে গরু দেখে দরদাম করে কিনে নিচ্ছেন।
আত্রাই থেকে গরু নিয়ে আসা রইচ উদ্দিন নামে এক ব্যাপারী বলেন, আমি প্রতি বছর এই হাটে গরু বিক্রি করি। এবার ১০টি গরু এনেছি। গরমের কারণে শুরুতে একটু দুশ্চিন্তা ছিল, কিন্তু এখন ক্রেতা ভালোই আসছে। ইতোমধ্যে ৪টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে।
কলমের বাসিন্দা রানা মাসুদ বলেন, দুই দিন ধরে হাট ঘুরছি। আজ একটু সকাল সকাল চলে এসেছি। দাম কিছুটা কম মনে হচ্ছে, কিন্তু গরুর মান ভালো। একটা মাঝারি সাইজের দেশি গরু পছন্দ হয়েছে, দরদাম চলছে।
হাটে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি ব্যবস্থা। অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে, রয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্যরাও। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে সাদা পোশাকের নজরদারি টিমও।
সিংড়া পৌর হাটের ইজারাদার মো. করম আলী জানান, সিংড়া গরু হাট চলবে ঈদের আগের হাটদিন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। স্থানীয় হাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শেষ দিকে ভিড় আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, হাটে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। জাল টাকা শনাক্তে বিশেষ মনিটরিং টিম কাজ করছে, এছাড়াও সার্বক্ষণিক মোবাইল টহল রয়েছে।
তীব্র গরম উপেক্ষা করেই কোরবানির হাটে মানুষের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে, ঈদুল আজহা মুসলিম সমাজের কাছে কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি একটি পারিবারিক ও সামাজিক আনন্দের উৎসব। গরুর হাটে এই প্রাণচাঞ্চল্য সেই প্রস্তুতিরই বহিঃপ্রকাশ।
সিংড়া পৌর প্রশাসক ( ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, “ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য হাটে কিছু অস্থায়ী ছাউনি, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা এবং গরুর জন্য স্প্রে মেশিনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। হাটে যেন কেউ হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা নজরদারিতে আছি। পাশাপাশি গরমে কোন গরু অসুস্থ হলে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক দ্রুত চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।