হুজুরদের খুশি করতে বিদেশে চামড়া রপ্তানি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা এম. এ. রাশেদ ভূঁইয়া।
সোমবার (২ জুন) সাভার চামড়া শিল্প নগরীর বিএফএলএলএফইএ ভবনের হলরুমে কাঁচা ও ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির সরকারি আদেশ বাতিলের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সরকার কাঁচা চামড়া বাহিরের দেশে রপ্তানীর সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ জানতে প্রশ্ন করলে রাশেদ ভূঁইয়া বলেন, “সরকার নিজের ইচ্ছায় ঈদের ছুটি ১০ দিন করেছে মানুষের মন রক্ষা করতে। হুজুরদের এবং মাদ্রাসার লোকজনকে খুশি করার জন্য সরকার নিজ ইচ্ছায় বাহিরের দেশে চামড়া রপ্তানি করছে। আমরা স্পষ্ট নিষেধ করে বলেছি, এটা করা ঠিক হবে না। আগে চামড়াটা রক্ষা করুন, কাঁচা চামড়া দেশের বাইরে রপ্তানি করা যাবে না। এতে অনেক খরচেয় বিষয় আছে। এছাড়া আমাদের এখানে রপ্তানির কোনো সুযোগ নেই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “সরকার কিভাবে কার সাথে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। এই সিদ্ধান্তটা আত্মঘাতী হয়েছে। রাস্তায় হাজার হাজার লোক আজ মানববন্ধন করতে এসেছে, তারা এইখানের শ্রমিক। এরা কি করে চলবে? এখানে প্রত্যেকটা লোক চামড়া শিল্পের সাথে যুক্ত।”
চামড়ার দাম কমার পেছনের সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখন সিন্ডিকেট বলতে কিছু নেই। আমরা ট্যানারি মালিকরা কোনোভাবেই এর সাথে যুক্ত না। যখন চামড়ার দাম ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা ছিল, তখন এগুলো হতো। এখন সারা বিশ্বে চামড়ার দাম কমে গেছে। এছাড়া তিন-চারটা হাত ঘুরে কাঁচা চামড়া আমাদের কাছে আসে।”
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, “আমরা কোরবানির মৌসুমে প্রায় ৬০% কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে থাকি। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ব্যতিক্রম। বাংলাদেশ থেকে কখনোই কাঁচা চামড়া রপ্তানি হয় না। ১৯৯০ সালে ওয়েট-ব্লু চামড়া রপ্তানি হয়েছিল, কিন্তু পরে তা নিষিদ্ধ করা হয়। এবারে কাঁচা চামড়া রপ্তানির বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করা সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের শিল্পখাতের অবস্থা বর্তমানে খুবই খারাপ। এর মধ্যে যদি কাঁচা চামড়া বিদেশে রপ্তানি করা হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়বে। কাঁচামাল যদি দেশ থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে হাজারো শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। আমাদের অনেক ব্যাংকঋণ রয়েছে, যেটা পরিশোধ করতে কঠিন পরিস্থিতি ফেস করতে হবে।”
এসময় সংবাদ সম্মেলনে ট্যানারি মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।