পাহাড় কাটা শেষে এবার অবৈধ বালু উত্তোলনের মজেছেন সেই বিএনপি নেতারা। পাওয়ার গ্রীড নির্মাণের জায়গায় ভরাট করতে সাঙ্গু নদী ঘেষে অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে জেলা যুবদলের সদস্য নাজিম উদ্দিন ও সম্রাট নামে এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে। এই বালু উত্তোলনের অবস্থায় হুমকির মুখে পড়েছে কুহালং হেডম্যান পাড়ার খালের পাড় ও শত বছরে শশ্মান।
অভিযোগ আছে, মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে পাওয়ার গ্রীড নির্মাণের জায়গায় মাটি ভরাটে কন্ট্রাক নিয়েছেন জেলা যুবদলের সদস্য নাজিম উদ্দিন ও সম্রাট নামে এক ব্যক্তি। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এর আগেও থোয়াইগ্য পাড়া, লেমুঝিড়ি, চড়ুই পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কেটে সাবাড় করে ফেলেছেন। মাটির পর এবার অবৈধ বালু উত্তোলনের হিড়িক জমিয়েছেন বিএনপি এই নেতারা।
জানা গেছে, আওয়ামী সরকার পতনের পর জেলা বিএনপি নেতারা অবৈধ কাজে বেপরোয়া হয়ে উঠেন। একের পর এক নানান অবৈধ কাজে জড়িত হচ্ছেন কেউ কেউ। এসব অবৈধ কাজে জড়িত রয়েছে আরো চার থেকে পাঁচজন সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট মিলেমিশে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পাহাড় কাটায় জড়াচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ , ভোর সকাল থেকে স্কেভেটর সাহায্যে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। এসবের কাজে জড়িত রয়েছে জেলা যুবদলের সদস্য নাজিম উদ্দিনসহ আরো বেশ কয়েকজন নেতারা। অবৈধ এই বালু উত্তোলনের কারণে শশ্মান ঘাট আর বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। তাদের বেপরোয়া ব্যবহার করায় কেউ ভয়ে মুখ খুলছে না। অবৈধ বালু উত্তোলনের বন্ধ হোক সেটি চান এলাকাবাসীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কুহালং ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়ার সামনে সাঙ্গু নদীর চর থেকে প্রকাশ্যেই তোলা হচ্ছে অবৈধ বালু। সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে দুটি স্কেভেটর আর মাটি সরবরাহ করতে ৮টি ডাম্পার ট্রাক। এসব ট্রাক দিয়ে স্বর্ণ মন্দির সংলগ্ন নব নির্মিত পাওয়ার গ্রীড মাঠে বালু ভরাট করা হচ্ছে। এই বালু তোলায় হুমকিতে পড়েছে পাশে থাকার কবরস্থান ও ঘরবাড়ি।
হেডম্যান পাড়া বাসিন্দা প্রুনু মং মারমা ও সন্তোষ বড়ুয়া বলেন, সকাল থেকেই এখানে স্কেভেটর দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। আর ডাম্পার (ট্রাক) দিয়ে বালুগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে। আমরা চাই এই বালু তোলার বন্ধ করা জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্কেভেটর চালক সুমন বলেন, বালু উত্তোলন করছে সম্রাট নামে এক ব্যক্তি এবং তার কথায় বালু তোলা হচ্ছে।
বালু উত্তোলন বিষয়ে অস্বীকার করেছেন জেলা যুবদলের সদস্য নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি বালু তুলছি না। বালুগুলো তুলছেন সম্রাট বলে ফোনটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এইচ এম সম্রাট সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বালু উত্তোলনের বাধা দেয়ায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, এখন ছুটিতে আছি। অফিস খুললে বালু উত্তোলন স্থান পরিদর্শন করে আইনুগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মারুফা সুলতানা খান হীরামনি বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়ে খবর পেয়েছি। বালু উত্তোলনকারী বিরুদ্ধে আইনে পদক্ষেপ নেয়ার হচ্ছে বলে জানান তিনি।